পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९8 -চুহালি *ने खून »v>> কাল পনেরো মিনিট বাইরে বসতে না বসতে পশ্চিমে ভয়ানক মেঘ করে এল। খুব কালো গাঢ় আলুথালু রকমের মেঘ, তারই মাঝে মাঝে চোরা আলো পড়ে রাঙা হয়ে উঠেছে। দুটো-একটা নেীকে। তাড়াতাড়ি যমুনা থেকে এই ছোটো নদীর মধ্যে প্রবেশ করে দড়িদড় নোঙর দিয়ে মাটি আঁকড়ে নিশ্চিন্ত হয়ে বসল। যারা মাঠে শস্ত কাটতে এসেছিল তারা মাথায় এক এক বোঝা শস্ত নিয়ে বাড়ির দিকে ছুটে চলেছে, গোরুও ছুটেছে, তার পিছনে পিছনে বাছুর লেজ নেড়ে নেড়ে সঙ্গে সঙ্গে দৌড়বার চেষ্টা করছে। খানিক বাদে একটা আক্রোশের গর্জন শোনা গেল; কতকগুলো ছিন্নভিন্ন মেঘ ভগ্নদূতের মতো সুদূর পশ্চিম থেকে উর্ধ্বশ্বাসে ছুটে এল—তার পরে বিদ্যুৎ বজ্র ঝড় বৃষ্টি সমস্ত একসঙ্গে এসে পড়ে খুব একটা তুর্কি-নাচন নাচতে আরম্ভ করে দিলে, বঁাশগাছগুলো হাউহাউ শব্দে একবার পূর্বে একবার পশ্চিমে লুটিয়ে লুটিয়ে পড়তে লাগল, ঝড় যেন সে সে ক’রে সাপুড়ের মতো বাশি বাজাতে লাগল,আর জলের ঢেউগুলো তিন লক্ষ সাপের মতো ফণা তুলে তালে তালে নৃত্য আরম্ভ ক’রে দিলে। কালকের সে যে কী কাণ্ড সে আর কী বলব। বজ্রের যে শব্দ সে আর থামে না, আকাশের কোনখানে যেন একটা আস্ত জগৎ ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। বোটের খোলা জানলার উপর মুখ রেখে প্রকৃতির সেই রুদ্রতালে আমিও বসে বসে মনটাকে দোলা দিচ্ছিলুম। সমস্ত মনের ভিতরটা যেন ছুটি-পাওয়া স্কুলের ছেলের মতো বাইরে ঝাপিয়ে উঠেছিল। শেষকালে বৃষ্টির ছাটে যখন বেশ একটু আর্দ্র হয়ে ওঠা গেল তখন জানলা এবং কবিত্ব বন্ধ করে খাচার পাখির মতো অন্ধকারে চুপচাপ বসে রইলুম। (t \p&