দুস্তরণীয়। সেতু কোথায়—তাহাও বালিকা বলিতে পারিলনা। দুস্তর বিপদে পড়িয়া প্রমোদের উপর যামিনীর অসংগত ক্রোধ জন্মিল, তীব্র স্বরে বলিলেন—
“আর যদি তোমার সঙ্গে কোথাও যাই ত আমার নামই মিথ্যে! এমন প্রলয়ঙ্করী বুদ্ধি যদি স্ত্রীলোকেরও দেখে থাকি! এথন বাড়ী যাই কি করে বল দেখি?”
প্রমোদ হাসিয়া বলিলেন,—“তা এত রাগ করছ কেন হে? নাহয় রাতটা এখানেই কাটান যাবে?”
যামিনী আরও ক্রুদ্ধ স্বরে বলিলেন “রাতটা এখানে কাটান যাবে! তুমি কাটাও—পাখী শীকার করতে এসে বাঘভাল্লুকের শীকার হও ভালই—কিন্তু আমার সে ইচ্ছা মোটেই নেই—”
বালিকা তাঁহাদের কথা শুনিয়া নিঃশব্দে হাসিতেছিল,—সহসা দয়ার্দ্র স্বরে বলিল—“নিকটেই নদীতীরে আমাদের মন্দির—অনেক পথিক যাত্রা সময়ে অসময়ে এখানে আশ্রয় গ্রহণ করেন,—আজ রাত্রের মত মন্দিরে বাস করবেন?”
যামিনী বলিলেন —“এখন অন্য উপায় নেই অভাব পক্ষে সেই ভাল,—ক্ষিদেতে মরে যাচ্ছি—ফলটল কিছু পেলেও এ যাত্রা বেঁচে যাই।”
প্রমোদ বলিলেন—“আপনার করুণায় আমাদের প্রাণদান দিলেন।”
বালিকা একটু যেন সবিস্ময়ে বলিলেন—“এ মন্দির ত পথিককে আশ্রয় দেবার জন্যেই।
যুবকেরা কৃতজ্ঞ হৃদয়ে যুবতীর অনুসরণ করিলেন।
যুবতী তখন, কেন তাঁহারা এখানে আসিলেন, কি করিয়া পথ হারাইলেন, তাঁহাদের নাম কি, এই সকল জিজ্ঞাসা করিতে করিতে পথ দেখাইয়া চলিল।