করিয়া বলিল, “নীরজা, কেন ভাই, তোর মুখখানি অত শুকনো? কিছু অসুখ ক’রেছে?”
নী। কি আর অসুখ করবে?
ক। তবে তোমার মুখ অত শুকনো দেখাচ্ছে কেন?
নী। আমার ঐ রকমই মুখ।
ক। আমি কি ভাই, তোমার মুখ আর কখন দেখি নি?
নী। আমার মুখ আর তুমি দেখবে কেন? তোমার দাদার মুখই বা তুমি দেখবে কেন? তোমার হিরণের মুখ দেখগে।
কনক কষ্টে লজ্জায় অপমানে নিরুত্তর হইয়া রহিল।
সেদিন দ্বিপ্রহরে আহারান্তে প্রমোদ শয়নকক্ষে বিশ্রাম করিতে আসিয়া নীরজাকে জিজ্ঞাসা করিলেন “নীরজা তোমার ভাই কি হয়েছে? কেন অত বিষণ্ন কমলিনি আমার?”
নীরজা বলিল, “তাও কি বুঝতে পার না সোণার চাঁদ? তোমাকে অসুখী দেখলে আমার মনে কি সুখ থাকতে পারে? সকালে তুমি অমন ভাবে চলে গেলে সেই থেকে—
“আমি বিষণ্ন হলেই তুই বিষণ্ন হবি? তোকে বিষণ্ন দেখলে যে আমার বুক ফেটে যায় সোণার কমল—"
“আর তোমাকে বিষণ্ণ দেখলে যে আমি মরে যাই সোণার মাণিক।”
ইহার অব্যম্ভাবী পরিমাণে উভয়ের প্রেমময় বাহুবন্ধনে ও অধরমিলনে তাঁহাদের অসুখঅশান্তি অচিরাৎ অতলসুখমগ্ন হইল। প্রমোদ বলিলেন—“এখানে থাকলে দেখছি আমাদের কারোই মনভাল থাকবে না, বাড়ীর বাতাসটা কিরকম যেন অসুখ অশান্তিতে ভ’রে উঠেছে। চল দিন কতকের জন্য বোটে ক'রে বেড়িয়ে আসা যাক্।”