পাতা:ছিন্নমুকুল - স্বর্ণকুমারী দেবী.pdf/১৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চত্বারিংশ পরিচ্ছেদ
১৯৩

পাঠিয়েছিলেন। আর আমি আপনাকে মারতে রাজি হইনি তাই আমার এই দশা করেছেন, তাঁর ভয়েই তো আমার দেশ, পরিবার ছেড়ে এখানে পালিয়ে আসতে হয়েছে।”

 তখন রামধন নীরজার অপহরণের কথা, প্রমোদকে হত্যা করিতে লোক প্রেরণের কথা, যাহা যাহা হিরণকুমারকে ইতিপূর্ব্বে সে বলিয়াছিল সমস্তই বলিল। বলিতে বলিতে আবার তাহার মুখচক্ষু দিয়া অগ্নিস্ফুলিঙ্গ নির্গত হইতে লাগিল। শুনিয়া নীরজার হৃদয় যেন স্তম্ভিত হইয়া আসিল, প্রমোদ বিস্মিত অথচ অপ্রত্যয় ভাবে বলিলেন, “তা কি ক'রে হবে, আমি যে স্বচক্ষে অন্য একজন ভদ্রলোককে পিস্তলহাতে ছুটে পালাতে দেখেছি।”

 রামধন বলিল, “বুঝেছি, আপনি কাকে দেখেছেন? হিরণবাবুর কথা বলছেন বুঝি?”

 প্রমোদ সবিস্ময়ে বলিলেন, “তুমি কি করে জানলে?”

 রামধন হিরণের বাড়ী গিয়া যাহা দেখিয়াছিল ও শুনিয়াছিল তখন সেই সকল বলিল।

 প্রমোদ বলিলেন,”হিরণ তো ওরূপ বলতেই পারে, তার কথায় বিশ্বাস?”

 রামধন রাগিয়া বলিল, “না ভদ্রলোকের কথায় বিশ্বাস নেই, খুনীর কথাই সত্যি। হিরণবাবু শুধু কি বলেছেন? আমাদের হরের কাছেই সব শুনেছি”।

 মনের ঝোঁকে হরির নামটা আর সে ঢাকিয়া রাখিতে পারিল না। এবং একবার তাহার নামটা প্রকাশ করিবার পর তখন অসঙ্কোচে ভাল করিয়া আগাগোড়া সব কথা খুলিয়া বলিল।

 শুনিয়া প্রমোদ স্তম্ভিত হইয়া পড়িলেন, তথাপি কেন সম্পূর্ণরূপে যামিনীকে দোষী ভাবিতে না পারিয়া, পরে এই বিষয়ের সম্পূর্ণ