তাঁহার সহিত কথা না কহিয়া আবার মুখ নত করিয়া কাকাতুয়ার সহিত কথা কহিতে লাগিল। অনেক ক্ষণ যামিনী মৌনভাবে থাকিয়া থাকিয়া অবশেষে বলিলেন “নীরজা এত গল্প কার সঙ্গে?”
নীরজা মুখ নত করিয়াই বলিল “কেন?” আমার সখীর সঙ্গে?”
“কাকাতুয়া নুরী এরাই কি নীরজা চিরকাল তোমার সখী থাকবে? আমাকে কি মনের কথা বল্বে না?” বলিয়া যামিনীনাথ একটি দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়িয়া মৌন হইয়া পড়িলেন। কিন্তু যখন দেখিলেন নীরজা তাঁহার নীরবতা বা দীর্ঘনিশ্বাস কিছুই লক্ষ্য করিল না—তখন আবার মৌন ভঙ্গ করিয়া বলিলেন “নীরজা আমাকে আর কতদিন এরূপ যাতনা সইতে হবে?”
নী। “কাকাতুয়াটা বুঝি ঘুমোলো?—আপনার যন্ত্রণা? কেন? কি যন্ত্রণা?”
যা। “কতকাল আমার মনোরথ আর অপূর্ণ থাকবে?”
নী। “এই যন্ত্রণা? দেখুন্ আমাদের বনে তো এমন বড় মল্লিকা ছিল না, কিন্তু আমার বোধ হয় এর চেয়ে সেগুলি তবু ভাল।”
যা। “নীরজা আমার কষ্টে তোমার কি কিছুমাত্র কষ্ট হয় না?” আমার এমন জিজ্ঞাসার উত্তর পর্য্যন্ত নেই।”
নী। “অ্যাঁ অ্যাঁ? আমি এই মল্লিকাটি দেখতে বড় অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিলেম। আমাদের কুটীরের চার ধারে এত মল্লিকা ফুট্তো কি আর বলব? বাবা কি আমাদের শেষ চিঠিখানি পেয়েছেন? সে চিঠি পেয়ে উত্তর দিলে কিম্বা তিনি এলে কতদিনে এখানে পৌঁছবেন বলুন দেখি? আহা, কতদিনে সেই কুটীরে গিয়ে বেড়াব!
যা। তোমার ইচ্ছার মত কাজ করতে আমার তো বিন্দুমাত্র ত্রুটি নেই। সন্ন্যাসী মহাশয়কে যে কত চিঠি লিখেছি তাতো জান?”
নী। “আমার কি সব কথাই আপনি রেখেছেন? তা’হ’লে এতদিন