পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

● ছুটির পড়া করিলেন । তাঁর তাহার পায়ের কাছে পড়িয়া গেল— কুমার বলিলেন, “আমার লক্ষ্যভ্রষ্ট হইল।” কমলাদেবী বলিলেন, “ন, পরিহাস না । তুমি শিকারে যাও।” ইন্দ্রকুমার কিছু বলিলেন না। ধনুর্বাণ ঘরের মধ্যে ফেলিয়া বাহির হইয়া গেলেন। যুবরাজকে বলিলেন, “দাদা, আজ শিকারের সুবিধা হইল না।” চন্দ্রনারায়ণ ঈষৎ হাসিয়া বলিলেন, “বুঝিয়াছি।” পঞ্চম পরিচ্ছেদ আজ পরীক্ষার দিন। রাজবাটীর বাহিরের মাঠে বিস্তর লোক জড়ো হইয়াছে। রাজার ছত্র ও সিংহাসন প্রভাতের আলোতে ঝকঝক করিতেছে। জায়গাটা পাহাড়ে, উচুনিচু— লোকে আচ্ছন্ন হইয়া গিয়াছে, চারি দিকে যেন মানুষের মাথার ঢেউ উঠিয়াছে। ছেলেগুলো গাছের উপর চড়িয়া বসিয়াছে। একটা ছেলে গাছের ডাল হইত্তে আস্তে আস্তে হাত বাড়াইয়া একজন মোটা মানুষের মাথা হইতে পাগড়ি তুলিয়া আর-একজনের মাথায় পরাইয়া দিয়াছে। যাহার পাগড়ি সে ব্যক্তি চটিয়া ছেলেটাকে গ্রেফতার করিবার জন্ত নিস্ফল প্রয়াস পাইতেছে, অবশেষে নিরাশ হইয়া সজোরে গাছের ডাল নাড়া দিতেছে, ছোড়াটা মুখভঙ্গি করিয়া ডালের উপর বাদরের মতো নাচিতেছে । মোটা মানুষের তুর্দশা ও রাগ দেখিয়া সে দিকে একটা হো-হে হাসি পড়িয়া গিয়াছে। একজন এক হাড়ি দই মাথায় করিয়া ৰাড়ি যাইতেছিল, পথে জনতা দেখিয়া সে দাড়াইয়া গিয়াছিল— হঠাৎ দেখে তাহার মাথায় হাড়ি নাই, হাড়িটা মুহুর্তের মধ্যে হাতে হাতে কত দূর চলিয়া গিয়াছে তাহার ঠিকানা নাই— দইওয়াল খানিকক্ষণ ই করিয়া চাহিয়া রহিল । একজন বলিল, “ভাই, তুমি দইয়ের বদলে ঘোল খাইয়া গেলে, কিঞ্চিৎ লোকসান হইল বৈ তো নয়।” দইওয়ালা পরম সাস্তুনা পাইয়া গেল। হারু নাপিতের পরে গা-মুদ্ধ লোক চট ছিল । তাহাকে ভিড়ের মধ্যে