পাতা:ছোটদের অপরাজিত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আরও বাহির হইল । সোদালি বনের ছায়া হইতে জল আহরণারত সহদেব, ঠাকুরমাদের বেলতলা হইতে শরশয্যাশায়িত ভীষ্ম, এ ঝোপের ও ঝোপের তলা হইতে বীর কর্ণ, গাণ্ডীবধারী অজুন, অভাগিনী ভানুমতী, কপিধ্বজ রথে সারথি শ্ৰীকৃষ্ণ, পরাজিত রাজপুত্ৰ দুৰ্যোধন, তমসা তীরের পর্ণকুটিরে গ্ৰীতিমতী তাপসবধূবেষ্টিতা অশ্রুমুখী ভগবতী। দেবী জানকী, স্বয়ংবর সভায় বরমাল্যহস্তে ভ্ৰাম্যমাণ আনত বদনা সুন্দরী সুভদ্ৰা, মধ্যাহ্নের খররৌদ্রে মাঠে মাঠে গোচারণ-রত সহায়সম্পাদহীন দরিদ্র ব্ৰাহ্মণ-পুত্র ত্ৰিজট-হাতছানি দিয়া হাসিমুখে অভ্যর্থনা করিয়া বলিল-এই যে তুমি, এই যে আবার ফিরে এসেছা! চেন না। আমাদের ? কত দুপুরে ভাঙা জানলাটায় বসে বসে আমাদের সঙ্গে মুখোমুখি যে কত পরিচয় । এসো- ‘এসো-এসো সঙ্গে সঙ্গে রাণুর গলা গোনা গেল-ও খোকা, ওরে দুষ্ট ছেলে, এই এক গলা বনের মধ্যে ঢুকে তোমার কি হচ্ছে জিজ্ঞেস করি।-- বেরিয়ে আয় বলছি। খোকা হাসিমুখে বাহির হইয়া আসিল । সে পিসিমাকে মোটেই ভয় করে না । সে জানে পিসিমা তাকে খুব ভালবাসে-দিদিমার পরে এক বাবা ছাড়া তাকে এমন ভাল আর কেউ বাসে নাই । হঠাৎ সেই সময় রাণুর মনে হইল অপু ঠিক এমনি দুষ্ট মুখের ভঙ্গি করিত ছেলেবেলায়-ঠিক এমনটি । যুগে যুগে অপরাজিত জীবন-রহস্য কি অপূর্ব মহিমাতেই আবার আত্ম-প্ৰকাশ করে । খোকার বাবা একটু ভুল করিয়াছিল। চব্বিশ বৎসরের অনুপস্থিতির পর অবোধ বালক অপু আবার নিশ্চিন্দিপুর ফিরিয়া আসিয়াছে। R