পাতা:ছোটদের অপরাজিত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এতগুলি অপরিচিতের সম্মুখে পড়িয়া কিছু লজ্জিত ও সঙ্কুচিত হইয়া উঠিল। পাশ কাটাইয়া ঘরের মধ্যে ঢুকিতেছিল, তাহার মা বলিল, দাড়া না। এখেনে। ভারি লাজুক ছেলে মা— এখন ওইটুকুতে দ্বাড়িয়েছে- আর এক মেয়ে ছিল, তা-সর্বজয়ার গলার স্বর ভারী হইয়া আসিল। গিল্পী ও বড় পুত্রবধু একসঙ্গে বলিল, নেই, হঁ্যা মা ? সর্বজয়া ৰলিল, সে কি মেয়ে মা ! আমায় ছলতে এসেছিল, কি চুল, কি চোখ, কি মিষ্টি কথা ? বকো-ঝাঁকো, গাল দাও, মা’র মুখে উচু কথাটি কেউ শোনে নি কোন দিন। ছোটবেী বলিল, কত বয়সে গেল মা ? -এই তেরোয় পড়েই-ভাদ্রমাসে তেরোয় পড়ল, আশ্বিন মাসের ৭ই-দেখতে দেখতে চার বছর হয়ে গেল । তেলি-গিল্পী দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়িয়া কহিল-আহা মা, তা কি করবে: বলে সংসারে থাকতে গেলে সবই• • • আট দশ দিন কাটিয়া গেল ; সর্বজয়া ঘরবাড়ি মনের মত করিয়া সাজাইয়াছে। দেওয়াল উঠান নিকাইয়া পুছিয়া লইয়াছে। নিজস্ব ঘরদের অনেকদিন ছিল না, নিশ্চিন্দিপুর ছাড়িয়া অবধিই নাইএতদিন পরে একটা সংসারের সমস্ত ভার হাতে পাইয়া সে গত চার বৎসরের সঞ্চিত সাধ মিটাইতে ব্যস্ত হইয়া পড়িল । সকলের তাগিদে শীঘ্রই অপু পূজার কাজ আরম্ভ করিল—দু'টি একটি করিয়া কাজকর্ম আরম্ভ হইতে হইতে ক্ৰমে এপাড়ায় ওপাড়ায় অনেক বাড়ি হইতেই লক্ষ্মীপূজায় মাকাল পূজায় তাহার ডাক আসে। অপু মহা উৎসাহে প্ৰাতঃস্নান করিয়া উপনয়নের চেলীর কাপড় পরিয়া নিজের টিনের বাক্সের বাংলা নিত্যকর্মপদ্ধতিখানা হাতে সেইয়া পূজা করিতে যায়। পূজা করিতে বসিয়া আনাড়ীর মত কোন অনুষ্ঠান করিতে কোন অনুষ্ঠান করে। পূজার কোন পদ্ধতি জানে না—বার বার বইয়ের উপর কুকিয়া পড়িয়া দেখে কি লেখা আছে— ‘বজায় হুং’ বলিবার পর শিবের মাথায় বজের কি গতি করিতে হইবে ‘ওঁ ব্ৰহ্মপৃষ্ঠ ঋষি সুতলছন্দঃ কুর্মে দেবতা” বলিয়া কোন মুদ্রায় Ο ό