পাতা:ছোটদের অপরাজিত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আলাপ হইল। সে জাতিতে সঁওতাল, অনেক দূরে কোথায় দুমকা জেলা আছে, সেখানে বাড়ি। অনেক দিন বর্ধমানে ছিল, বঁকা বঁকা বাংলা বলে, পায়ে হঁটিয়া সেখান হইতে আসিতেছে। গন্তব্য স্থান অনিৰ্দেশ্য-এরূপে যতদূর যাওয়া যায় যাইবে, সঙ্গে তীর ধনুক আছে, পথের ধারে বনে মাঠে যাহা শিকার মেলে-তাহাই খায়। সম্প্রতি একটা কি পাখি মারিয়াছে, মাঠের কোন ক্ষেত হইতে গোটকয়েক বড় বড় বেগুনও তুলিয়াছে—তাহাই পুড়াইয়া খাইবার যোগাড়ে শুকনো লতা-কাঠি কুড়াইতেছে। অপু বলিল, কি পাখি দেখি ? লোকটা ঝোলা হইতে বাহির করিয়া দেখাইল একটা বড় হরিয়াল ঘুঘু। সত্যিকারের তীর ধনুক-যাহাতে সত্যিকারের শিকার সম্ভব হয়-অপু কখনও দেখে নাই। বলিল, দেখি একগাছা তীর তোমার ? পরে হাতে লইয়া দেখিল, মুখে শক্ত লোহার ফলা, পিছনে বুনোেপাখি পালক বাধা-অদ্ভুত কৌতুহলপ্রদ ও মুগ্ধকর জিনিস। -- --আচ্ছা এতে পাখি মরে, আর কি মরে ? লোকটা উত্তর দিল, সবই মারা যায়--খরগোস, শিয়াল, বেঁজী, এমন কি বাঘ পৰ্যন্ত । তবে বাঘ মারিবার সময় তীরের ফলায় অন্য একটা লতার রস মাখাইয়া লইতে হয় ।--তাহার পর সে তুতি গাছতলায় শুকনা পাত-লতার আগুন জ্বালিল। অপুর পা আর সেখান হইতে নড়িতে চাহিল না-মুগ্ধ হইয়া দাড়াইয়া দেখিতে লাগিল, লোকটা পাখিটার পালক ছাড়াইয়া আগুনে ঝলসাইতে দিল, বেগুনগুলাও পুড়াইতে দিল। বেলা অত্যন্ত পড়িলে অপু বাড়ি রওনা হইল। আহার শেষ করিয়া লোকটা তখন তাহার বেঁাচক ও তীর ধনুক লইয়া রওনা হইয়াছে। এ রকম মানুষ সে তো কখনো দেখে নাই । বাঃ-যেদিকে দুই চোখ যায় সেদিকে যাওয়া-পথে পথে তীর ধনুক দিয়া শিকার করা, বনের লতাপাত কুড়াইয়া গাছতলায় দিনের শেষে বেগুন পুড়াইয়া খাওয়া। গোটা আষ্টেক বড় বড় বেগুন সামান্য একটু নুনের Sbr.