পাতা:ছোটদের অপরাজিত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

টিফিনের পরের ঘণ্টায় সত্যেনবাবুর ক্লাস। চব্বিশ-পঁচিশ 邓<兀颈杰 যুবক, বেশ বলিষ্ঠ গড়ন, ইহার মুখ দেখিয়া অপুর মনে হইল ইনি ভারী বিদ্বান বুদ্ধিমানও বটে। প্ৰথম দিনই ইহার উপর কেমন এক ধরণের শ্রদ্ধা তাহার গড়িয়া উঠিল। সে শ্রদ্ধা আরও গভীর ইহার মুখের ইংরিজি উচ্চারণে। ছুটির পর স্কুলের মাঠে বোডিং-এর ছেলেদের নানা ধরণের খেলা শুরু হইল । তাহাদের ক্লাসের ননী ও সমীর তাহাকে ডাকিয় লইয়া গিয়া অন্য সকল ছেলেদের সহিত পরিচয় করাইয়া দিল । সে ক্রিকেট খেলা জানে না, ননী তাহার হাতে নিজের ব্যাটখানা দিয়া তাহাকে বল মারিতে বলিল ও নিজে উইকেটু হইতে একটু দূরে দাড়াইয়া খেলার আইনকানুন বুঝাইয়া দিতে লাগিল । খেলার অবসানে যে-যাহার স্থানে চলিয়া গেল। খেলার মাঠে পশ্চিম কোণে একটা বড় বাদাম গাছ, অপু গিয়া তাহার তলায় বসিল । একটু দূরে গবর্ণমেণ্টের দাতব্য ঔষধালয়। বৈকালেও সেখানে একদল রোগীর ভিড় হইয়াছে, তাহদের নানা, কলরবের মধ্যে একটি ছোট মেয়ের কান্নার সুর শোনা যাইতেছে। অপুর্ব কেমন অন্যমনস্ক হইয়া গেল চৌদ-পনেরো বৎসর বয়সের মধ্যে এই আজ প্রথম দিন, যেদিনটি সে মায়ের নিকট হইতে বহুদূরে আত্মীয়বন্ধুহীন প্রবাসে একা কাটাইতেছে। সেদিক দিয়া দেখিতে গেলে আজ তাহার জীবনের একটি স্মরণীয় দিন । কত কথা মনে ওঠে, এই সুদীর্ঘ পনেরো বৎসরের জীবনে কি অপূৰ্ব বৈচিত্র্য, কি ঐশ্বৰ্য্য! সমীর টেবিলে আলো জ্বালিয়াছে। অপুর কিছু ভালো লাগিতেছিল না-বিছানায় গিয়া শুইয়া রহিল। খানিকটা পরে সমীর পিছনে চাহিয়া তাহাকে সে অবস্থায় দেখিয়া বলিল, পড়বে না ? অপু বলিল, একটু পরে—এই উঠচি। —আলোটা জ্বালিয়ে রাখো, সুপারিন্টেণ্ডেণ্ট এখুনি দেখতে আসবে, শুয়ে আছ দেখলে বাকবে ।