পাতা:ছোটদের অপরাজিত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেজায় ভিড়। খুলনার স্ট্রীমার এবারও ফেল করিল। শ্বশুরবাড়ি পৌছিতে বেলা দুপুর গড়াইয়া গেল। নৌকা হইতে দেখে কাজল ঘাটে তাহার অপেক্ষায় হাসিমুখে দাড়াইয়া-নৌকা থামিতে-না-থামিতে সে ছুটিয়া আসিয়া তাহাকে জড়াইয়া ধরিল। মুখ উচু করিয়া বলিল-বাবা,-আমার আরব্য উপন্যাস ?-অপু সে-কথা একেবারেই ভুলিয়া গিয়াছে। কাজল কঁাদ-কঁাদ সুরে বলিল-হু-উ বাবা, এত ক’রে লিখলাম, তুমি ভুলে গেলে- লণ্ঠন ? আপু বলিল,-আচ্ছা তুই পাগল নাকি-লণ্ঠন কি করবি ?--কাজল বলিল, সে লণ্ঠন নয় বাবা ! হাতে ঝুলানো যায়, রাঙা কাচ, সবুজ কাচ বের করা যায় এমনি ধারা। হু-উ, তুমি আমার কোন কথা শোনা না । একটা আশি আনবো বাবা ? -আর্শি ?-fক করবি আর্শি ? -अभि आ१ि८ङ छिंभ्र :प्प्रंथएदाঅপৰ্ণার দিদি মনোরমা অনেকদিন পরে বাপের বাড়ি আসিয়াছেন। বেশ সুন্দৰী, অনেকটা অপর্ণার মত মুখ । ছোট ভগ্নীপতিকে পাইয়া খুব আহ্বলাদিত হইলেন, স্বৰ্গগত মা ও বোনের নাম করিয়া চোখের জল ফেলিলেন ! অপু তঁাহার কাছে একটা সত্যকার স্নেহ-ভালবাসা পাইল । সন্ধ্যাবেল অপু বলিল- আসুন দিদি, ছাদের উপর বসে আপনার সঙ্গে একটু গল্প করি। ছাদ নির্জন, নদীর ধারেই, অনেকদূর পর্যন্ত দেখা যায়। অপু বলিল-আমার বিয়ের রাতের কথা মনে হয় মনোরম দি ? মনোরমা মৃদু হাসিয়া বললেন-সেও যেন এক স্বপ্ন। কোথা থেকে কি যেন সব হয়ে গেল ভাই-এখন ভেবে দেখলে—সেদিন তাই এই ছাদের উপর বসে অনেকক্ষণ ধরে ভাবছিলুম-তোমাকেও তো আমি সেই বিয়ের পর আর কখনও দেখি নি। এবার এসেছিলুম। ভাগ্যিস, তাই দেখাটা হ’ল ! হাসির ভঙ্গি অপর্ণার মত, মুখের কত কি ভাব, ঠিক তাহারই মত-বিস্মৃতি জগৎ হইতে সে-ই যেন আবার ফিরিয়া আসিয়াছে। १२