পাতা:ছোটদের অপরাজিত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপু বৈকালের দিকে দোকানে গেল। তাহারা বইখানির দ্বিতীয় সংস্করণ নিজেদের খরচে ছাপাইতে ইচ্ছুক-অপু কি চায় ? অপু ভাবিয়া দেখিল । প্ৰথম সংস্করণ হু-হু কাটিতেছে—অপর্ণার গহনা বিক্রয় করিয়া বই ছাপাইয়াছিল, লাভটা তার সবই নিজের । ইহাদের দিলে লাভ কমিয়া যাইবে বটে, কিন্তু দোকানে দোকানে ছুটাছুট, তাগাদ-এসব হাঙ্গামাও কমিবে । তা ছাড়া নগদ টাকার একটা মোহ আছে, সাতপাচ ভাবিয়া সে রাজী হইল । ফার্মের কর্তা তখনই একটা লেখাপড়া করিয়া লইলেন-আপাততঃ ছশো টাকায় কথাবার্তা মিটিল, শ’-দুই সে নগদ পাইল । দু’শো টাকা খুচরা ও নোটে । এক গাদা টাকা ! হাতে ধরে না। কি করা যায় এত টাকায় ? পুরানো দিন হইলে সে ট্যাক্সি করিয়া খানিকটা বেড়াইত, রেস্টুরেন্টে খাইত, বায়োস্কোপ দেখিত । কিন্তু আজকাল আগেই খোকার কথা মনে হয় । খোকাকে কি আনন্দ দেওয়া যায় এ টাকায় ? মনে হয় লীলার কথা । লীলা কত अन्ना कदिऊ आछि ! একটা ছোট গলি দিয়া যাইতে যাইতে একটা শরবৎ-এর দোকান। দোকানটাতে পান বিড়ি বিস্কুট বিক্রি হয়, আবার গোটা দুই তিন সিরাপের বোতলও রাহয়াছে! দিনটা খুব গরম, অপু শরবৎ খাওয়ার জন্য দোকানটাতে দাড়াইল । অপুর একটু পরেই দু’টি ছেলেমেয়ে সেখানে কি কিনিতে আসিল । গলিরই কোন গরিব ভাড়াটে গৃহস্থ ঘরের ছোট ছেলে মেয়ে-মেয়েটি বছর সাত, ছেলেটি একটু বড়। মেয়েটি আঙ্গুল দিয়া সিরাপের বোতল দেখাইয়া বলিল —ওই দ্যাখ দাদা সবুজ-বেশ ভালো, না ? ছেলেটি বলিল-সব মিশিয়ে দ্যায়। বরফ আছে, ওই যে -ক’ পয়সা নেয় ?-চার পয়সা । অপুর জন্য দোকানী শরবৎ মিশাইতেছে, বরফ ভাঙ্গিতেছে, ছেলেমেয়ে দু'টি মুগ্ধনেত্ৰে দেখিতে লাগিল। মেয়েটি অপুর দিকে চাহিয়া বলিল-আপনাকে ওই সবুজ বোতল থেকে দেবে না ? r