পাতা:ছোট্ট রামায়ণ - উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী.pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অযোধ্যার প্রাণ রাম, তিনি যান বনে,
তাহাকে ছাড়িয়া লোক থাকিবে কেমনে?
রুষিয়া লক্ষ্মণ কন, ‘মারিব রাজায়!
কৈকেয়ী ভরতে মারি রাখিব দাদায়।’
আদরে বলেন রাম, তারে লয়ে বুকে,
‘ভাইরে অমন কথা আনিয়ে না মুখে।
পিতা হন আমাদের দেবতা সমান,
রাখিব তাহার কথা দিয়া এই প্রাণ।’

কৌশল্যার দুঃখ আর কি বলিব হায়—
কথায় সে দুঃখ বুঝানো কি যায়?
রামেরে বিদায় দিতে হইল যখন,
না জানি কেমন তাঁর করেছিল মন!
রাম কন, ‘দেখো মাগো পিতারে আমার,
চৌদ্দ বছরের পরে আসিব আবার।’
সীতা কন, ‘যেথা রাম, সেথা মোর ঘর,
দুজনে সুখেতে রব বনের ভিতর।’
লক্ষ্মণ বলেন, ‘দাদা, মোরে লও সাথে,
ফল মূল দিব আনি, তুলি নিজ হাতে।’
সুমিত্রা বলেন, ‘যাও, যাওরে লক্ষ্মণ,
রামেরে দেখিয়ে বাছা পিতার মতন।
সীতা যেন মা তোমার, এই রেখ মনে,
ঘর ভেবে সুখে বাপ থাক গিয়া বনে।’
বনে যেতে তিনজন করি তাঁরা মন
কাঙালে করিলা দান যত ছিল ধন।

৩৫