পাতা:ছোট কাকী ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

না হয় তা ছাত্ৰবৃত্তি পাশ করিলে ছেলে একটা মোক্তারভ ত হইতে পারে। তখন তাহার অন্ন খায় কে ? উক্ত ব্যবহারাজীবদিগের সম্বন্ধে চক্ৰধর চৌধুরীর এমনি একটা উচ্চ ধারণা ছিল । কিন্তু বাপের সংকল্প যতই উচ্চ হোক, লেখাপড়ায় ছেলের কিছুমাত্ৰ মনোযোগ ছিল না । গ্রামের বাঙ্গালা স্কুলে ভৰ্ত্তি হইয়া সে • পাড়ার দুষ্ট ছেলেদের দলপতি হইয়া উঠিল। স্কুলে এমন অমনোযোগী ছাত্র দ্বিতীয় ছিল না। পণ্ডিত পড়া জিজ্ঞাসা করিলে তাহার পেটব্যথা করিত ; অঙ্ক কষিবার সময় সে শ্লেটের উপর ময়ুর অ্যাকিত, এবং শেষ ঘণ্টায় স্কুলের সকল ছাত্ৰ সারি দিয়া দাড়াইয়া সুর করিয়া যখন কড়া-গণ্ডা আওড়াইত, তখন শু্যামসুন্দর গোলে হরিবোল দিত, আর নিকটবৰ্ত্তী ছেলেদের চাদরে গ্ৰন্থি বঁাধিয়া মজা দেখিত। পণ্ডিত মহাশয় তাহার গায়ের চাদর খুলিয়া কখন জলবিছুটি লাগাইতেন, কখন তাহার পিঠে বাখ্যারি ভাঙ্গিতেন ; কিন্তু সে সংশোধনের অতীত হইয়া পড়িয়াছিল। প্ৰহার অত্যন্ত গুরুতর হইলে বেতের অগ্রভাগ হইতে দেহটাকে বঁাচাইবার জন্য সে দুই হাত বিস্তুত করিয়া কঠোর আর্তনাদ করিত। পণ্ডিত মহাশয় এক এক দিন তিনি হাত জমি মাপিয়া তাহার নাকে খত দিয়া লাইতেন ; কোন দিন পণ্ডিতের আদেশক্রমে তাহার দুইজন সমপাঠী তাহার দুই কাণ ধরিয়া সকল ছেলেদের সম্মুখে পাঁচসাতবার দৌড়াদৌড়ি করাইত; কিন্তু শাস্তি যতই গুরুতর হোক, ষাঁড়ের মত শুষ্ক চিৎকার ভিন্ন, তাহার চক্ষে কেহ কোনদিন একবিন্দু অশ্রু দেখে নাই । Sov )