পাতা:ছোট কাকী ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খত প্ৰভৃতিতে প্ৰায় ছয় সাত শত টাকার কাগজ রাজমোহিনীর হস্তে ছিল । রাজমোহিনী সমস্ত কাগজপত্র ভ্রাতার হস্তে প্ৰদান পূর্বক তাহার উপর টাকা আদায়ের ভারার্পণ করিল ; রতনপুরের বাস জন্মের মত উঠিয়া গেল। পুত্রকন্যাগুলিকে লইয়া নিরাভরণা শুভ্ৰবেশিনী বিধবা ছয়বৎসর পরে ভিখারিণীবেশে বাসস্থান গোবিন্দপুরে ফিরিয়া আসিল । কমলাকান্তই এখন এই বৃহৎ পরিবারের একমাত্র আশ্ৰয় । তিনি একাকী অপেক্ষাকৃত একটা ছোট বাসা ভাড়া করিয়া ভগ্নহৃদয়ে,নিরুৎসাহচিত্তে প্রভুর কাজ করিতে লাগিলেন। জীবনের সে সাহস, চিত্তের সে প্ৰফুল্লতা, মনের সে শান্তি, সমস্ত বিনষ্ট হইয়া গিয়াছে ; শুধু সৰ্ব্বদর্শী, সুখদুঃখের প্রতি চির-উদাসীন, কঠোর কাল তাহার চক্ষের উপর একখানা বিষাদাচ্ছন্ন কৃষ্ণবৰ্ণ যবনিকা প্রসারিত করিয়া দিয়াছে । তাহার ভিতর দিয়া তিনি জগতের প্ৰত্যেক দ্রব্য, জীবনের পরিবর্তন, ঘোর মসীচিহ্নে চিত্ৰিত দেখিতে লাগিলেন। দুই মাস আগেকার সেই পুলক কম্পিত, আলোকপ্ৰদীপ্ত বসুন্ধরা যেন কতদূরে এক অন্ধকার-সমাকীর্ণ অলঙ্ঘ্য ব্যবধানের সুন্তরালে সরিয়া গিয়াছে। তাই সমস্ত দিনের পরিশ্রমের পর তিনি যখন সন্ধ্যাকালে তঁাহার নির্জন কুটীরে প্রত্যাগমন করিতেন, তখন জীবনের প্রতি একটা নিদারুণ অনাস্থায় তাহার হৃদয় পরিপূর্ণ হইয়া উঠিত; তিনি আলোকহীন, শব্দহীন, নির্জন গৃহের বারান্দায় একখানি জীর্ণ মাদুরের উপর উপবেশন করিয়া দেখিতেন, মাশকের দল পরিপূর্ণ ক্ষুধা সঞ্চয় পূর্বক অদূরবত্তী পন্ধিল [ >२१