পাতা:ছোট কাকী ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিনিলাম, আমাদের বাড়ী হইতে বেশী দূরে বাই নাই। সম্মুখে দেখি, কে যেন আসিতেছে ; তখন মাথায় ঘোমটা টানিয়া দিয়া জড়সড়ভাবে পথের একপাশ্বে দাড়াইলাম। লোকটি আমার দিকে তীব্র দৃষ্টিপাত করিয়া চলিয়া গেল। আমি আবার চলিতে লাগিলাম। একটু গিয়াই আমাদের গলির মোড় পাইলাম ! তখন এক দৌড়ে আমাদের খিড়কীতে প্ৰবেশ করিয়া দরজা রুদ্ধ করিয়া দিলাম। কেহই কিছু জানিতে পারিল না । সমস্ত রাত্ৰি যে আমার কি যন্ত্রণায় কাটিল, তাহা বলিতে পারি না । আমার মনে হইল, কে যেন আমার ওষ্ঠে অগ্নিসংযোগ করিয়াছে। আমার মুখ যে পুড়িয়া গেল ! হায় ! ইহাৱই নাম সুখ, ইহারই নাম প্ৰেম ! কে জ্বলন্ত অগ্নিশিখা আমার ওষ্ঠে মাখাইয়া দিল ? একবার মনে হইল, গলায় দড়ি দিয়া এ জীবন শেষ করি , কিন্তু পারিলাম না। কেন পারিলাম না ? তাহা হইলে এপাপের প্রায়শ্চিত্ত হইল কৈ ? যত দিন বাচিব, তত দিন আমার এমনই করিয়া সমস্ত মুখ অদৃশ্য অগ্নিতে পুড়িতে থাকিবেচিরজীবন আমি অন্যের অগোচরে ধিকিধিকি করিয়া তুষানলে দগ্ধ হইব, তবে তা আমার প্রায়শ্চিত্ত ! আমি সেই প্ৰায়শ্চিত্ত গ্ৰহণ করিলাম। মরা হইল না । আর আমার এই রূপ-ইতাই আমার কাল। কা’ল রাত্রে আমি প্ৰতিজ্ঞা করিয়াছিলাম, বিলাস ত্যাগ করিব, রূপের বাসায় আগুন লাগাইয়া দিব । তাই আজ প্ৰাতেই আমার সেই নরকের সঙ্গী কেশপাশ কাটিয়া ফেলিয়াছি, অলঙ্কার খুলিয়া ফেলিয়াছি, २४ ]