তাই সেদিন জাপানের সেই সমর-গৌরব ভারতবাসীর বুকে আশা জাগাইয়া তুলিত।
অন্য সকলের মত বালক জওহরলালও সেই সংবাদ পড়িবার জন্য উদ্গ্রীব হইয়া থাকিতেন। কল্পনায় নিজেকে আনন্দ-ভবনের সেই সুখসজ্জা হইতে দূরে অজানা যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড় করাইতেন—জাপানের হইয়া যেন বালক যুঝিতেছে—তারপর কল্পনার দৃশ্য দেখাইয়া দেয়—-এই ভারতের রণক্ষেত্রে অসিহস্তে বালক সৈন্যদের পুরোভাগে চলিয়াছে, তাহার পিছনে অগণিত ভারতবাসী, সকলের হাতে অসি- বালক তাহাদের লইয়া চলিয়াছে—পরাধীনতার কারাগার হইতে স্বাধীনতার মুক্ত প্রান্তরে-
ইহার বৎসর খানেক পরে, জওহরলাল তখন সবেমাত্র পনেরো বৎসরে পদার্পণ করিয়াছেন, তখন হঠাৎ তাঁহার স্থাণু জীবনের রথ চলিতে আরম্ভ করিল— ভারতবর্ষ হইতে ইংলণ্ডে-
হ্যারো আর ক্যাম্ব্রিজ—যেখানে ইংলণ্ডের বাছাইকরা ছেলেরা তাহাদের জাতির শ্রেষ্ঠ নাগরিক হইবার শিক্ষা পাইয়া আসিতেছে—যেখানে ধুরন্ধর শিক্ষকেরা লোহার জালে-আঁটা নিয়মের কারখানায় ভবিষ্যৎ ইংরেজ প্রতিনিধিদের গড়িয়া তোলেন— সেখানে গিয়া পড়িলেন এই দেশের টোলে পড়া ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের এক বংশধর।