পাতা:জওহরলাল - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় (১৯৪৮).pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
জওহরলাল

সব গরম গরম বক্তৃতা করিত যে, তাহা শুনিলে মনে হইত, তাহারা যেন বিপ্লবী হইয়াই জন্মগ্রহণ করিয়াছে। পণ্ডিত জওহরলাল তাহার আত্মচরিতে লিখিয়াছেন—“যাহারা এই সব গরম গরম বক্তৃতা করিত, তাহারাই পরে দেখিয়াছি, ভারতে আসিয়া বৃটিশ আমলাতন্ত্রের সব চেয়ে কায়েমী ঢাকায় পরিণত হইয়াছে।

 এই মজলিসে সেই সময় ভারতবর্ষ থেকে তিন জন বড় রাজনৈতিকের দেখা জওহরলাল পাইয়াছিলেন, বিপিনচন্দ্র পাল, লালা লাজপৎ রায় এবং মিঃ গোখলে। তাহাদের বক্তৃতায় তিনি নূতন ভারতবর্ষের সন্ধান পান। সেই সময় পিতার সহিত পত্র আদান-প্রদানের মধ্য দিয়া তিনি জানিতে পারেন যে তাহার পিতা এই জাতীয়তাবাদী দলের বিপক্ষে মডারেট দলের নেতা হইয়াছেন। এই সংবাদে পিতৃগর্ব্বে গর্বিত তাহার মনে আঘাত লাগে; এবং মনের ভাব গোপন না করিয়াই তিনি পিতাকে এক পত্র লেখেন। সেই পত্রে প্রবাসী পুত্রের রাজনৈতিক বিলাসিতা দেখিয়া পণ্ডিত মতিলাল ক্ষুণ্ন হইয়াছিলেন।

 সেদিন পিতা-পুত্রের মধ্যে কেহই কল্পনা করিতে পারেন নাই যে, কি এক মহাভবিতব্যতার দিকে তাঁহাদের দুইজনের জীবনের ধারা এক হইয়া মিলিতে চলিয়াছে!