সে সময়, প্রত্যেক ভারতীয় ছাত্রের কাছে এবং বিশেষ করিয়া ছাত্রের অভিভাবকদের কাছে, ইণ্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসে প্রবেশ করা ছিল, জীবনের চরম কাম্য। কিন্তু জওহরলাল বা তাঁহার অভিভাবকদের কাছে ইহার বিশেষ কোন আকর্ষণ ছিল না। জওহরলালের মন তখন কাঁচা স্বদেশিকতার আদর্শে ভরপূর। তাই নিজেকে বৃটীশ আমলাতন্ত্রের প্রাণহীন অঙ্গ ভাবিতে তাহার মন চাহিত না। ওধারে তাঁহার মাতাপিতার ভাবনা ছিল যে, ছেলে যদি ইণ্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসে প্রবেশ করে, তাহা হইলে চাকুরীর খাতীরে তাহাকে দূর-দূরান্তরে ঘুরিয়া বেড়াইতে হইবে। এক তো ছেলেবেলা হইতে পুত্র প্রবাসী, তাহার পর সেই পুত্র যখন ঘরে ফিরিয়া আসিবে, তখন যদি আবার তাহাকে দূরে দূরে ঘুরিয়া বেড়াইতে হয়, তাহা হইলে অমন চাকুরীতে কি লাভ? তাই সিভিল সার্ভিসে তাঁহাদের মত ছিল না।
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় হইতে জওহরলাল দ্বিতীয় শ্রেণীর অনার্স লইয়া গ্র্যাজুয়েট হইলেন; এবং বংশের ধারা অনুসরণ করিয়াই ব্যারিষ্টারী পড়িবার জন্য “বারে” প্রবেশ করিলেন। এই সময় তিনি য়ুরোপের বিভিন্ন দেশে ছুটির সময় ঘুরিয়া বেড়ান; এবং ফ্রান্স, জার্মানী এবং নরওয়ে দেশের সহিত সাক্ষাৎ ভাবে পরিচিত হন।