বিশেষ করিয়া তিনি যখন জানিতে পারিলেন যে তাঁহার পুত্র এই আন্দোলনে যোগদান করিতে উৎসুক, তখন এক নিদারুণ দুশ্চিন্তা তাঁহাকে পাইয়া বসিল । তিনি ভাবিলেন, এই আন্দোলনে যোগদান করা মানে কারাবাসে যাওয়া! কারাবাসের যন্ত্রণা জওহরলাল সহিবে কি করিয়া? পিতাপুত্রের মধ্যে একটা নীরব প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলিতে লাগিল। একদিকে দুর্ব্বার পিতৃস্নেহ-অন্যদিকে পুত্রকে তিনি নিজে পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত করিয়া তুলিয়াছেন—মনকে স্বাধীনভাবে গড়িয়া উঠিতে সহায়তা করিয়াছেন—আজ সে মনকে বাধা দিলে চলিবে কেন? কিন্তু যতই নিজের মনে যুক্তি করেন, ততই দুর্ব্বল হইয়া পড়েন, তাঁহার পুত্র কি করিয়া কারাযন্ত্রণা সহ্য করিবে? আর তিনি প্রাসাদে বসিয়া তাহা দেখিবেনই বা কি করিয়া? এই দুশ্চিন্তা তাঁহাকে এমন ভাবে পাইয়া বসে যে, রাত্রিকালে যখন কেহ কোথাও নাই, তিনি খালি মাটীতে নিজে শুইয়া দেখিতে লাগিলেন, ভূমিশয্যায় কি রকম কষ্ট হয়! হায়, পিতৃস্নেহ।
নিরুপায় হইয়া চতুর আইনজীবি পণ্ডিত মতিলাল গান্ধিজীকে এলাহাবাদে তাঁহার বাড়ীতে আমন্ত্রণ করিয়া আনিলেন। জওহরলালের অজ্ঞাতে এইভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কি সব পরামর্শ হইল। তারপর গান্ধীজি স্বয়ং জওহরলালকে ডাকিয়া বলিলেন,