এইভাবে কয়েক মিনিটের মধ্যে বিশ-পঁচিশখানা গ্রামে সংবাদ চলিয়া গেল এবং দেখিতে দেখিতে দলে দলে কৃষাণরা আসিয়া জুটিতে লাগিল। জওহরলাল অবাক হইয়া দেখিলেন যে মাত্র একটি লোকের চেষ্টায় এই কিষাণরা কি ভাবে নিজেদের সঙ্ঘবদ্ধ করিয়া তুলিয়াছে ।
এই সম্পর্কে তাঁহার আত্মচরিতে তিনি লিখিয়াছেন —“আমাদের ঘিরিয়া তাহাদের অজস্র প্রীতি যেন আলোর মত ঝরিয়া পড়িতে লাগিল—কি গভীর আশায় তাহারা আমাদের দিকে চাহিয়া রহিল—যেন আমরা তাহাদের সকল দুঃখ দূর করিয়া দিব—যেন সব অত্যাচার হইতে তাহাদের রক্ষা করিয়া আমরা তাহাদের সামান্য প্রাপ্য তাহাদের দিয়া দিব। তাহাদের কাহারও অঙ্গে সম্পূর্ণ কাপড় একখানি ছিল না। তাহাদের সেই সহজ সরল প্রীতি, সেই নিদারুণ দারিদ্র্য্য, সেই সুগভীর কৃতজ্ঞতাবোধ, তাঁহার সামনে দাঁড়াইয়া থাকিতে লজ্জায় এবং দুঃখে আমাদের দেহমন যেন ভাঙ্গিয়া পড়িতেছিল—আমাদের রাজনীতি এই সব লক্ষ লক্ষ অন্নহীন বস্ত্রহীন ভারত-মাতার পুত্রকন্যাদের কথা বাদ দিয়াই চলে — আমাদের সুখসমৃদ্ধ জীবনের পাশাপাশি অর্দ্ধনগ্ন অবস্থায় ইহারাও রহিয়াছে, আমরা তাহা ভুলিয়াও ভাবি না — সেদিন আমার চোখের সামনে আর এক ভারত মূর্ত্তি ধরিয়া