পাতা:জওহরলাল - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় (১৯৪৮).pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
জওহরলাল

জাগিয়া উঠিল, উপবাসী, লাঞ্ছিত, সর্ব্ব-অঙ্গে অত্যাচারের নখ-দন্ত আঘাতে অসহায়—একান্ত অসহায়—দূর শহর হইতে দুই একদিনের অতিথি হইয়া তাহাদের মধ্যে আসিয়াছি—তবুও আমাদেরই উপর তাহাদের সেই সুগভীর আস্থা আমার অন্তঃকরণ পর্য্যন্ত আলোড়িত করিয়া তুলিল এবং সেই সঙ্গে এক অজানা গুরুদায়িত্ব, তাহার বিরাট বোঝার ভারে আমাকে আতঙ্কিত করিয়া তুলিল।"

 তিনদিন গ্রামবাসীদের সঙ্গে বাস করিয়া জওহরলাল ফিরিয়া আসিলেন। কিন্তু ইহার পর হইতে তিনি নিয়ম করিয়া গ্রামে গ্রামে ঘুরিয়া বেড়াইতে লাগিলেন । গান্ধীজির মতবাদ তিনি মনে-প্রাণে গ্রহণ করিলেন এবং যুক্ত-প্রদেশের জাতীয়-আন্দোলনে সাক্ষাৎভাবে যোগদান করিলেন।

 তখন অসহযোগ আন্দোলনের একটা প্রবল তরঙ্গ সারা দেশকে দুলাইতেছিল। জওহরলাল তাঁহার আত্মচরিতে লিখিতেছেন,—“দেশের অন্য বহু যুবকের মত, আমি এই আন্দোলনে একেবারে ডুবিয়া গেলাম— এতদিন পর্য্যন্ত জীবনে যাহা কিছু করিয়াছি, যে সব বন্ধুত্ব, সম্পর্ক, কাজ ও অকাজ লইয়া মত্ত ছিলাম, সমস্তই ভুলিয়া গেলাম—এমন কি বই পড়াও বন্ধ হইয়া গেল। সমস্ত চেতনা, সমস্ত ভাবনা, এই আন্দোলন যেন গিলিয়া লইল—চিরকাল বাড়ীর