বন্ধু—মহলে এমন একটা বিষয় লইয়া তাহারা সেই শিশুকালেই আলোচনা করিত, যাহার সহিত ইংরেজ প্রীতির কোন যোগ ছিল না।
জওহরলাল যদিও পিতার একমাত্র পুত্র, তবুও তিনি জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন, এক সুবৃহৎ একান্নবর্তী পরিবারে। সে পরিবারে তাঁহার সমবয়সী বা দু'এক বৎসরের বড়, অনেক খুড়তুতো জাঠতুতো ভাই ছিল। তাহাদের সকলকে লইয়া ছিল বালকের বন্ধুমহল।
সম্ভ্রান্ত ধনী পরিবারে জন্মগ্রহণ করিবার জন্য তিনি অনেক সুখ পাইয়াছিলেন, যাহা সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেরা পায় না—কিন্তু তেমনি বালককালের একটা সুখ হইতে তিনি বঞ্চিত হইয়াছিলেন—সেটা হইল, বাড়ীর বাহিরে বিপুল পৃথিবীর ছেলেমেয়েদের সহিত খেলা করা, তাহাদের সহিত মিলিয়া মিশিয়া হল্লা করা, গাছে চড়া—বালককালের হাজার রকমের দুষ্টামি!
সেইজন্য ছেলেবেলা হইতেই তিনি ছিলেন ভাবুক —তাহার দলবল লইয়া নানারকমের গুরুগম্ভীর বিষয় আলোচনা করিতেন—একটা বিষয় বিশেষ করিয়া সদাসর্ব্বদাই তাহার মনে খেলা করিত, তাহা হইল ইংরেজদের সহিত আমাদের অর্থাৎ ভারতবর্ষীয় লোকদের সম্পর্ক।