বাড়ীর ভিতর বালক দেখিতেন, বড় বড় সব ইংরেজ তাঁহার বাবা বা কাকা বা জ্যাঠার সহিত সমান ভাবে উঠিতেছে, বসিতেছে, বন্ধুর মত ব্যবহার করিতেছে, নিজের ইংরেজ গভর্নেস হাত পাতিয়া তাঁহার পিতার নিকট হইতে মাহিনা লইতেছে, কিন্তু বাহির হইতে যে সব গল্প সেই বালক-মহলে উড়িয়া আসিত, তাহাতে বালকের মনে ইংরেজ জাতির প্রতি এক তীব্র ঘৃণা জাগিয়া উঠিত।
সে-সময় পার্কে ইংরেজদের বসিবার জন্য বেঞ্চ আলাদা করা থাকিত, ‘নেটিভ’ লোকেরা সেখানে বসিতে পারিত না। বড় বড় পার্কে এমন সব জায়গা থাকিত, যেখানে নেটিভ লোকেরা ঢুকিতে পর্য্যন্ত পাইত না।
রেলে ইংরেজদের জন্যে আলাদা কামড়া! ভিড়ের দরুণ কোন নেটিভ যদি সেখানে ঢুকিতে যাইত, তাহা হইলে তাঁহাকে অপমান করিয়া বাহির করিয়া দেওয়া হইত। এমন কি রাস্তায় প্রস্রাব কবিবার জায়গাতেও য়ুরোপীয়দের আলাদা বন্দোবস্ত!
এই সব ব্যাপারে প্রতিপদে আমাদের বুঝাইয়া দেওয়া হইত যে, আমরা পরাধীন, ইংরেজদের দাস—ইংরেজরা আমাদের মনিব, রাজার জাতি, উচ্চস্তরের লোক।
বালক যখন এই সব ব্যাপার শুনিতেন, তখন এত যে ইংরেজ-প্রীতি, তাহা সত্ত্বেও, তাঁহার মনের ভিতর