পাতা:জগতের ইতিবৃত্ত.pdf/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ම ] লোঁহের আবিষ্কারের পূর্বে লোকে যে কতকাল পর্যন্ত প্রস্তরে এবং ব্ৰঞ্জে অস্ত্রশস্ত্রাদি প্রস্তুত করিয়াছিল তাহা আমরা বলিতে পারি না। কিন্তু ইউরোপের কোন ২ স্থলের যে সকল প্রদেশ হইতে এই সকল অস্ত্রশস্ত্র উৎখাত হুইয়াছে তাহাদের গভীরতা দেখিয়া অনুমান করা যায় যে অন্ততঃ গ্রীষ্টের পাঁচ সহস্ৰ বৎসর — এমন কি তাহারও — পূৰ্ব্বে লোকে শাণিত প্রস্তরের অস্ত্রাদি ব্যবহার করিত । কোন ২ দেশে মানবজাতি অম্পে ২ সভ্যতাপদবীতে অধিরোহণ করিয়াছে। এখনও মধ্যআসিয়াতে দেখিতে পাওয়া যায় যে তাতার-বংশ-সমৃত ভিন্ন ২ জাতির তাম্বুতে বাস করে এবং অশ্বারোহণ পূর্বক তৃণমর ভূমিবিভাগে পরিভ্রমণ করিয়া বেড়ায়। মেষরষাদি পশুদল ইহার সঙ্গে করিয়া লইয়া যায়। ইছারা কৃষিকাৰ্য্য করে না, কেবল দুগ্ধপান ও মাংস ভক্ষণ করিয়া জীবনধারণ করে। তাছারা চীন হইতে ইউরোপীয়রসিয়ার দক্ষিণ পর্যন্ত অনায়সে ভ্রমণ করিতে পারে, কারণ এই স্থবিস্তত ভূমিখণ্ডে কোন দুর্লঙ্ঘ্য পদত বা দুস্তর সাগর তাছাদের গতিরোধ করে না। চারি সহস্ৰ বৎসর হইল এই বিস্তীর্ণ দেশ এই প্রকার ভ্রমণশীল জাতি । কর্তৃক অধুসিত হইয়া আসিতেছে। ইছারা পুরাকালে সিথিয়ান নামে পরিচিত ছিল। এতকাল অতীত হইল তথাপি ইহাদের আচারব্যবহারে অধিক পরিবর্তন সংঘটিত হয় নাই—এমন কি এখন পর্যন্তও ইছারা লিখিতে ও পড়িতে পারে না । । এমন কতকগুলি দেশ আছে যেখানকার লোকেরা অতি প্রাচীনকালে সমধিক সভ্য হইয়া উঠিয়াছিল, কিন্তু আধুনিক ইউরোপীরের তাহাদিগকে এক্ষণে অতিক্রম করিয়াছে। তাহীদের মধ্যে চীন ও হিন্দু সমধিক প্রসিদ্ধ। চীনদের এখন যে রূপ অবস্থা দুই সহস্ৰ বৎসর পূর্বে প্রায় অবিকল সেই রূপ ছিল। সেই এককালেই ছিন্দুরা সমধিক সভ্যতাশালী হইয়া উঠিয়াছিলেন এবং তঁহিীদের ংস্কৃত ভাষাকে সৰ্ব্বাঙ্গসুন্দর করিয়াছিলেন। দর্শনশাস্ত্রেও ছিন্দুরা সমধিক উন্নতি লাভ করিয়াছিলেন। র্তাহার স্বদেশীয় রাজাদিগের কর্তৃক শাসিত হইতেন এবং উাছাদের সমাজ সভ্যতা-অনুমোদিত রীতি অনুসারে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। সেই অবধি ইংরাজদিগের ভারতবর্ষাধিকারের পূর্বপর্যন্ত হিন্দুরা উন্নতির পথে অতি অস্পই অগ্রসর হইয়াছেন। যদিও হিন্দুরা পুরাকালে সভ্যতার পদবীতে এতদূর আরোহণ করিয়াছিলেন তথাপি সংস্কৃত ভাষায় কোন প্রকৃত ইতিহাস দৃষ্ট হয় না । ভারতবর্ষের পুরাবৃত্ত সম্বন্ধে যাহা কিছু আমরা জানি তজ্জন্য আমরা । অন্যান্য দেশের ইতিহাসলেখক দিগের নিকট ঋণী। গৌড়ের ধংসাবশেষ এবং আসাম ও উড়িষ্যার নিবিড়বনমধ্যে সুবিস্তীর্ণ নষ্টাবশেষ সকল দর্শন করিয়া আমাদের প্রতীতি স্বয় যে এই সকল প্রদেশ অবশ্যই এক কালে সমধিক পরাক্রম