করিয়া মেয়েকে দিবার দুধটুকু ঘিটুকু ফলটুকু কোথায় পাইবে সে? কচি মেয়ে মাই খায়। শ্যামার নিজেরও দারুণ ক্ষুধা, পাতের মাছটি তবু সে বকুলের থালায় তুলিয়া দেয়। মণিকে দিয়া চিনিপাতা দই আনায় দু'পয়সার, বলে দই মুখে রুচবে লো, ভাতকটা সব মেখে খেয়ে নে চেঁছেপুছে, লক্ষ্মী খা। দই খেলে আমার বমি আসে, তুই খা তো। ও মণি, দে বাবা একটু আচার এনে দে দিদিকে।
বকুলকে সে বসাইয়া রাখে, কাজ করিতে দেয় না।
দেখিতে দেখিতে বকুলের চেহারার উন্নতি হয়।
কিন্তু মুস্কিল বাধায় সরযূ। বলে মেয়েকে কাজকর্ম করতে দিচ্ছ না এ কিন্তু ভাল নয় ভাই।
শ্যামা বলে খেটে খেটে সারা হয়ে এল ওকে আর কাজ করতে দিতে কি মন সরে দিদি? অল্পবিস্তব কাজ ধরতে গেলে করে বৈকি। মেয়ে বিছানা টিছানা পাতে। বিকেলে খানিকক্ষণ হেঁটেও বেড়ায় ছাতে তা তো দেখতেই পাও?
মনে হয় সরযূর অনধিকার চর্চায় শ্যামা রাগ করে। পাশকরা ধাত্রী। পাঁচটি সন্তানের জননী সে। মেয়ের কিসে ভাল কিসে মন্দ সে তা বোঝে না, পাশকরা ধাত্রী তাকে শিখাইতে আসিয়াছে।
শ্যামা প্রাণপণে মেয়েকে এটা ওটা খাওয়াইবার চেষ্টা করে, বকুলের কিন্তু অত খাওয়ার সখ নাই। তার সব চেয়ে জোরালো সখটি দেখা যায়, বিধানের বিবাহ সম্বন্ধে। শ্যামাকে সে ব্যতিব্যস্ত করিয়া তোলে। বলে, কি করছ মা তুমি? চাকরী বাকরি করছে এবার দাদার বিয়ে দাও। শামুর সঙ্গে দাদার অত মাখামাখি দেখে ভয়ও কি হয় না তোমার?
কিসের মাখামাখি লো?—শ্যামা সভয়ে বলে।
নয়? বিয়ের যুগ্যি মেয়ে ও। কেন রোজ পড়া জানতে আসবে দাদার কাছে। পড়া জানবার দরকার হয় মাষ্টার রাখুক না। না মা দাদার তুমি বিয়ে দাও এবার।
শামুর আসা যাওয়া শ্যামার চেয়েও বকুল বেশি অপছন্দ করে। কি পাকা গিন্নিই বকুল হইয়াছে। সাংসারিক জ্ঞান বুদ্ধিতে কচি মনটি যেন তার