পাতা:জন্মভূমি (সপ্তদশ বর্ষ).pdf/৪৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

गभाव्नांत्रिभो । প্রেম ও শান্তি ।—বায়সাহেব শ্ৰীযুক্ত হারাণচঞ্জ রক্ষিত প্রণীত মূল্য বারো আনা । শ্ৰীগুরুদাস চট্টোপাধ্যায় ২০ ১ নং কর্ণওয়ালিস স্ট্রীটে প্রাপ্তব্য। প্রেম ও শাস্তি, সাংসাৰি ক ও আধ্যাত্মিক এই দুইটি ভাবের সামঞ্জস্য মাখিয়া ভক্ত কবি হারাণচন্দ্ৰ উপন্যাসাচ্ছলে এই পুস্তকখানি রচনা কবিয়াছেন, প্ৰথমে দুটি নায়ক নায়িকার প্রসঙ্গ ; নায়ক চাহে ভগবানকে-নায়িকা চাহে-তাহাকে পার্থিক প্রেমে আকর্ষণ করিতে, দুইদিকে বিপরীত আকর্ষণ বহু তর্ক বিতর্কের পর নায়ক একবার “দুর হও,” বলিয়া নায়িকাকে বর্জন করিয়া যায় ; রামাপাগলার সহিত নায়কের আধ্যাত্মিক ভাবের কথোপকথন, রামাপাগলার অপর নাম রামব্ৰহ্ম ঠাকুর। বিদ্যাপতির কয়েকটি পদ আবৃত্তি করিয়া রামব্ৰহ্মঠাকুর সেই বিভ্রান্ত প্রেমি কের চিত্ত বিমুগ্ধ করেন, সংসারে মায়াই বড়, ইহা প্ৰতিপন্ন করিয়া তিনি তাহাকে মহামায়ার স্মরণ লাইতে বলেন, সেহি উপদেশে নায়ক মন্মথ ভক্তিমান হইয়া মা ! মা ! বলিয়া জগদম্বাকে ডাকেন, রামব্ৰহ্ম ঠাকুর অদৃশ্য হন, তাহার পরেই আবার সেই মোহিনী নায়িকার সাহিত মন্মথের দ্বিতীয়বার সাক্ষাৎ সে সময়ের ভাব অন্য প্রকার যদিও প্রথমাংশে মোহিনীকে পাপিষ্ঠ কলঙ্কিনী ও পোড়ার মুখী বলিয়া গঞ্জনা দেওয়া হইয়াছে; কিন্তু পরিচয়ে প্ৰকাশ মোহিনী একটি বাল্যবিধবা, মৃত পতির মূৰ্ত্তি দর্শন পিপাসিনী, বাস্তবিক কলঙ্কিনী নহে, অথচ মন্মথের প্রতি তাহার অনুরাগ জন্মিয়াছিল, পাগল রূপি রামব্ৰহ্ম ঠাকুর শেষকালে তাহাদিগকে পার্থিক ও স্বৰ্গীয় প্রেমের প্রভেদ বুঝাইয়া সত্যপথে আনয়ন করেন, সাধারণ নায়ক নায়িকার প্রেমের নাম কাম তাহ অতি সঙ্কীর্ণ ভগবৎ প্ৰেম বিশ্বব্যাপী সেই প্ৰেমে অবগাহন করিলে শান্তিলাভ হয় শ্ৰীশ্ৰীরামকৃষ্ণ পরমহংসের পবিত্র নাম স্মরণে ভক্ত কবি হারাণচন্দ্ৰ শান্তিরও উত্তম উদাহরণ দেখাইয়াছেন, শক্তি মহিমা অক্ষুন্ন রাখিয়া সেই সঙ্গে, হরিনামের মাহাত্ম্য সংযোগ করা হইয়াছে, অভেদ ভবেই শান্তি অভেদ ভাবেই প্ৰেম । অকপটে ভগবানে মতি স্থির রাখিয়া সংসারি মানব সংসার সুখে বিহার করিলেও প্রেম ও শান্তির ছায়ায় দেহ মন শীতল করিতে পারেন, ইহাই প্ৰতিপন্ন করাই গ্ৰন্থ কারের উদ্দেশ্য । গল্পের রচনা কৌশলে গ্ৰন্থকারের উদ্দেশ্য সিদ্ধ হইয়াছে, ভাষা প্ৰাঞ্জল যেখানে যেখানে কথোপকথনের নাটকের প্রণালী অবলম্বিত হইয়াছে, সেই সেই স্থলের ভাষা বিশুদ্ধ প্ৰকৃতির অনুগত সাধারণের সুখ, পাঠ্য ও সুবোধ্য পাঠকগণ এই প্রেম ও শান্তি পুস্তক পাঠে আধ্যাত্মিক ভাবের অনেক উপদেশ পাইবেন, আমরা ইহা পাঠ করিয়া পরম প্রীতিলাভ করিয়াছি। হারাণচন্দ্ৰ। এইরূপে ভক্তিমাৰ্গে বিচৰণ করিলে সকলের নিকটই যশস্বী হইবেন ।