পাতা:জন্‌ ষ্টুয়ার্ট মিলের জীবনবৃত্ত.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

i> এই সকল ঘটনায় মিলের মতে দুইট পরিবর্তন সংঘটিত হয় । প্রথমতঃ জীবন সম্বন্ধে তাহার পূৰ্ব্বে এই মত ছিল যে আত্মমুখই মানব । জীবনের সমস্ত কাৰ্য্যের নোদক ও একমাত্র লক্ষ্য। কিন্তু এক্ষণে এই মতের কিঞ্চিৎ পরিবর্তন সংঘটিত হইল। র্তাহার বর্তমান মতে আত্মমুখ-কার্য্যের অব্যবহিত লক্ষ্য নহে ; যাহারা আত্মমুখকে কার্যের অব্যবহিত লক্ষ্য মনে করে, তাহারা কখনই মুখী হইতে পারে না। যাহারা পরের মুখ ও পরের উন্নতি আত্মকার্যের অব্যবহিত লক্ষ্য মনে করে তাহারাই প্রকৃত সুখী। আত্মমুখের অন্বেষণে আজীবন পরিভ্রমণ কর, কখনই সুখ পাইবে না ; পরের দুঃখ বিমোচনে, পরের মুখ বৰ্দ্ধনে ও বিজ্ঞানাদির আলোচনায় সতত নিরত থাক, সুখ আপন হইতেই আসিবে। পরের দুঃখ বিমোচন ও পরের মুখবৰ্দ্ধন তোমার গন্তব্য স্থান হউক ; পথিমধ্যে এত আনন্দ ও এত সুখ পাইৰে যে জীবন প্রার্থনীয় বলিয়া বোধ হইত। কখন আত্মমুখের জন্য ব্যগ্র হইও না, কখন অস্তরে আত্মমুখের অস্তিত্বের অনুসন্ধান করিও না । কারণ সুখ,~ব্যগ্রতা ও অনুসন্ধিৎসা সহিতে পারে না । যখনই তোমার মনে উদিত হইবে ‘আমি কি সুখী? তখনই সুখ অপস্থত হইবে । ফলতঃ আত্ম-বহির্ভূত কোন বিষয় জীবনের উদ্দেশ্য ন হইলে সুখ নাই। এই নূতন মত,এখন হইতে মিলের জীবনবিজ্ঞানের মূলভিত্তিস্বরূপ হইল। মিলের মত বিষয়ে যে দ্বিতীয় পরিবর্তন সংঘটিত হয় তাহা এই—এত দিন তিনি বুদ্ধিবৃত্তি ও স্মরণশক্তি প্রভৃতি মানসিক বৃত্তিনিচয়ের পরিমার্জনকেই শিক্ষার প্রধান ও একমাত্র অঙ্গ বলিয়া মনে করিতেন; এত দিন তিনি দয়া, স্নেহ, প্রেম,ভক্তি প্রভৃতি হৃদয়ের কোমল বৃত্তিনিচয়ের পরিমার্জনার বিশেষ আবশ্যকতা উপলব্ধি করিতে পারেন নাই। এখন হইতে তিনি বুঝিতে পারিলেন যে শিক্ষার সম্পূর্ণতা বিধানে উভয় প্রকার বৃত্তিনিচয়ের পরিমার্জনারই বিশেষ উপযোগিতা রহিয়াছে; উভয়প্রকার বৃত্তিনিচয়ের সামঞ্জস্য বিধান করাই শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য; মানসিক বৃত্তিনিচয়ের পরিপোষণ জন্য যেমন গণিত বিজ্ঞানাদির প্রয়োজন, সেইরূপ হৃদয়ের কোমল বৃত্তিনিচয়ের পরিপোষণ জন্য কবিতা, নাটক, নবন্যাস, সঙ্গতী