পাতা:জপজী - গুরু নানক.pdf/৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( t ) করিলে আশ্চৰ্য্যাম্বিত হইতে হয়। অতি অল্পবয়সেই নানক, হিন্দু ও মুসলমান উভয় ধৰ্ম্মশাস্ত্ৰে বিশেষ অভিজ্ঞতা লাভ করিয়াছিলেন। নবমবৰ্ষবয়সে নানকের উপনয়ন হয়। কথিত আছে, এই বয়সেই মহাত্মা নানক জাতি-বোধক উপবীত-চিকু ধারণ করিতে অস্বীকৃত হইয়াছিলেন। পরে আত্মীয় স্বজনগণের একান্ত অনুরোধে উপবীতগ্ৰহণ করেন । কালুর অবস্থা স্বচ্ছল ছিল না ; কায়-ক্লেশে তাহার সংসার-যাত্রা নিৰ্বাহিত হইত। তাই, নানকের বয়স যখন সবে-মাত্র পঞ্চদশবর্ষ তখনই তঁহাকে কোনও লাভজনক ব্যবসায়ে প্ৰবৃত্ত করাইবার উদ্দেশ্যে, বালা-নামক ভৃত্যকে সঙ্গে দিয়া নিকটবৰ্ত্তী গঞ্জ হইতে বিংশ মুদ্রার লবণ খরিদ করিবার জন্য পাঠাইয়াছিলেন। নানকের প্রথম ব্যবসায় অতি অদ্ভুতভাবে সম্পাদিত হইল। বালাকে সঙ্গে লইয়া, তরুণ যুবক রাস্তা চলিতে চলিতে পথিমধ্যে একদল সাধুর জমায়েৎ দেখিতে পাইলেন। সাধুদিগের দর্শন পাইয়া, নানক মুহূৰ্ত্ত-মধ্যে ব্যবসায়-বাণিজ্যের কথা সমস্ত বিস্মৃত হইয়া গেলেন, এবং ঐ বিংশ মুদ্রাদ্বারা প্রচুর আহাৰ্য্য খরিদ করিয়া, সাধুদিগকে উত্তমরূপে ভোজন করাইলেন। সঙ্গীয় ভূত্য বালা, নানকের এই প্ৰকার আচরণের প্রতিবাদ করিলে, মহাপুরুষ, হাস্য করিয়া বলিলেন, “দেখ বালা, লোকে লাভ করিবার উদ্দেশ্যেই ব্যবসায়ে প্ৰবৃত্ত হয়। আমরা এই অর্থদ্বারা অদ্য যে অপূর্ব সওদা করিলাম, এমন অত্যধিক লাভজনক ব্যবসায় আর কি হইতে পারে ? মানবজাতির সঙ্গে বাণিজ্য করা অপেক্ষা, পরমাত্মা ঈশ্বরের সঙ্গে বাণিজ্য কি অধিক লাভ-জনক নহে ?” বালা, ব্যবসায়-বাণিজ্যের এই প্রকার নূতন ব্যাখ্যা শ্রবণ করিয়া নীরব হইয়া রহিলেন। পর-জীবনে এই বালা, এবং মর্দনানামক অন্য এক ডোম-জাতীয় সঙ্গীতজ্ঞ পুরুষই, গুরুজীর দুই প্ৰধান ভক্তরূপে পরিগণিত হইয়াছিলেন।