পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১০৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৬৬
জয়তু নেতাজী

গান্ধীজীর চিত্তে এই তত্ত্বই আর সকল তত্ত্বকে পরাভূত করিয়া বিরাজ করিতেছে। তারপর, তাঁহার রক্তগত বৈশ্য-বুদ্ধি, অর্থাৎ বণিক-মনােবৃত্তি। এই মনােবৃত্তির বশে তিনি আদান-প্রদান বা লেন-দেন, ও আপােষকেই, সর্ব্ববিধ উপার্জ্জনের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ নীতি বলিয়া বিশ্বাস করেন। বণিককে সর্ব্বদাই দুইপক্ষের কথা ভাবিতে হয়, এবং অপর পক্ষের তুষ্টিসাধনের জন্য, সকল সময়েই রফা করিতে হয়। ইংরেজীতে যাহাকে বলে ‘make-up’―গান্ধীজীর ব্যক্তিমানসের, তথা চরিত্রের সেই ‘make-up’ ইহাই; তাহা অতিমানবীয় বলিয়া বিস্ময়-বিমূঢ় হইবার কোন কারণ নাই। তাঁহার ব্যক্তিত্বের যাহা কিছু অসাধারণত্ব তাহা আর কিছু নয়, সকল শক্তিমান পুরুষেরই যাহা, তাহাই,―অদম্য আত্মবিশ্বাস; এবং সেই বিশ্বাসের বস্তুকে আর সকলের উপরে আরােপণ করিবার ‘zeal’ বা একাগ্র বাসনা। এইরূপ মানুষ পৃথিবীতে বিরল নয়, এমন কি ইহাদের অপেক্ষাও শক্তিমান পুরুষ দুর্লভ নহে; কিন্তু ইতিহাস বা কালের কতকগুলি লগ্ন আছে, সেই লগ্ন যদি এইরূপ জীবনের সহিত যুক্ত হয় তবেই গান্ধীজীর মত পুরুষের অভ্যুত্থান ঘটে; লগ্ন যদি অনুকুল না হয় তবে তাহা অপেক্ষাও মহত্তর ব্যক্তি ইতিহাসের অগােচর থাকিয়া যায়।

 কিন্তু যাহা বলিতেছিলাম। গান্ধীজার সাধনতত্ত্বের মূলে আছে ভক্তি ও বৈরাগ্য; ভক্তি অর্থে―একটা বিরাট শক্তি, যে শক্তি দুর্জ্ঞেয় হইলেও মঙ্গলময়―সেই শক্তির নিকটে আত্মসমর্পণ (ইংরেজও সেই শক্তির অংশ); এবং বৈরাগ্য