পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১০৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
গান্ধীজী ও নেতাজী
৬৭

অর্থে―গীতার সেই “মা ফলেষু কদাচন”। তিনি নিজে সেই শক্তির সেবকমাত্র, তাহার সহিত সমকক্ষতা-লাভের স্পর্দ্ধা তাঁহার নাই, তাই তাঁহার যুদ্ধও অন্তর্মুখী, বহির্মুখী নয়। যে শক্তি বহির্জগতের সকল ব্যাপারে মানুষকে যুদ্ধে আহ্বান করিতেছে, এবং সেই যুদ্ধশক্তির পরীক্ষা দ্বারাই তাহার আত্মারও উদ্বােধন করিতেছে,―সৃষ্টির সেই নিয়মকে গান্ধীজী মানেন না; সেই আধিভৌতিককেই তিনি আধ্যাত্মিকের সম্মান দিতে রাজী নহেন। তিনি শক্তিপন্থী নহেন, ভক্তিপন্থী, তিনি যাহাকে শক্তি বলেন, তাহা নিজের মধ্যে নিজেকে শাসনে রাখিবার শক্তি―বাহিরের রাজ্য শত্রুকে ছাড়িয়া দিয়া অন্তরে স্বর্গরাজ্য স্থাপনের শক্তি; ইহা সেই—‘Render unto Cæser what is Cæser's due” ভারতবর্ষের মানুষ যে পরাধীন, সেটা একটা বড় সমস্যা বা দুর্ঘটনা নয়, তাহার বিপরীত যাহা, গান্ধী-ধর্ম্মে―সেই স্বাধীনতার কোন পারমার্থিক মূল্য নাই, কারণ সেই স্বাধীনতাকে রক্ষা করিবার জন্য বহু জাগতিক ও প্রাকৃতিক নিয়মের অধীনতা স্বীকার করিতে হয়। তবে, মনুষ্যজীবনের নিঃশ্রেয়স কি? পরহিতব্রতের দ্বারা―জনসেবার দ্বারা―নিজ নিজ আত্মার উন্নতি সাধন; তাহাতেই প্রত্যেকের যথাকালে মুক্তিলাভ হইবে, সে মুক্তিলাভ এখনই না হয়, না হইবে, কিন্তু ঐ পরহিতব্রত―দুঃখীর দুঃখ-মোচন―অহিংসা ও সত্যাগ্রহের দ্বারা যতটুকু সাধ্য―তাহাই এখন করিতে হইবে।

 এই ধর্ম্ম ও নীতি গান্ধীজী কখনও ত্যাগ করেন নাই। তিনি