পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭০
জয়তু নেতাজী

ইহা যাহারা বুঝিবে না, তাহাদের প্রত্যেককে মহাত্মা গান্ধী হইতে হইবে, অন্যথা অন্ধ অথবা ভণ্ড না হইয়া উপায় নাই। আসল কথা, ভারতের তথাকথিত স্বাধীনতার জন্য গান্ধীজী খুব বেশী চিন্তিত নহেন; ইংরেজকে বিশ্বাস করিতেই হইবে, বিশ্বাস করতে পারিলেই ঐ অহিংসা ও সত্যাগ্রহের বলে অনেক পথ খুলিয়া যাইবে; সে পধ সংগ্রামের পথ নয়, মৈত্রীর পথ; তাহাতে স্বাধীনতা লাভ না হউক, যাহা প্রকৃত কল্যাণ তাহাই লাভ হইবে। এই যে দুঃস্থ ও দুর্গতগণের দুঃখমোচন―ইহার তুল্য ধর্ম্ম নাই; কেবল স্বাধীনতা-লাভ বলিতে লোক যাহা চায় তাহাও একটা পাপ-প্রবৃত্তি, প্রকৃত স্বাধীনতা ঐ হিতসাধনের স্বাধীনতা―ইংরেজ এ দেশে থাকা সত্ত্বেও সেই স্বাধীনতার যথেষ্ট অবকাশ আছে। তাহার সাধনপ্রণালী বা কর্ম্মপদ্ধতিও তিনি নির্দ্ধারণ করিয়া দিয়াছেন। উহা পালন করতে পারলেই চতুর্ব্বর্গ লাভ হইবে। ঐ ধর্ম্ম এমনই যে, উহাতে নিষ্ফলতার আশঙ্কাও নাই, কারণ― “নেহাভিক্রমনাশোহস্তি প্রত্যবায়ো ন বিদ্যতে। স্বল্পমপ্যস্য ধর্ম্মস্য ত্রায়তে মহতো ভয়াৎ।” আমার মনে হয়, ইহাই গান্ধী-ধর্ম্মের ও গান্ধী-কর্ম্মের সারতত্ত্ব―ইহা বুঝিয়া লইতে পারিলে গান্ধী-কংগ্রেসের কোথাও প্রত্যবায় দেখা যাইবে না। ভুল আমরাই করিয়াছি, আমরা সেই বিলাতী আদর্শের স্বাধীনতাকেই পরমপুরুষার্থ বলিয়া স্থির করিয়াছি, অথচ তাহার জন্য গান্ধী-নীতিকেই বরণ করিয়াছি—না করিয়া উপায় নাই; এজন্য, আমাদেরও যেমন, গান্ধীজীরও তেমনই বিড়ম্বনার অন্ত নাই।