পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গান্ধীজী ও নেতাজী।
৭৭

―না করিলে, দক্ষিণেশ্বরের পঞ্চবটীমূলে সেই আত্মার এমন প্রকাশ দেখা যাইত না। কিন্তু আরও কারণ আছে; স্বাধীনতাকে বাঙালী যে-রূপে ও যে-উপায়ে চিরদিন ভোগ করিয়াছে —সে যেন নিঃশ্বাস-বায়ুর মত। এজন্য সে যেমন সে বিষয়ে সচেতন ছিল না, তেমনই তাহার অভাবে, অন্তরের অন্তরে শ্বাস-কষ্ট অনুভব করিয়াছে। সে স্বাধীনতা কেমন? স্বাধীন রাজ্য-স্থাপনের স্বাধীনতা নয়, ধ্বজা তুলিয়া সমারোহ সহকারে স্বাধীনতা ভোগ করাও নয়; পাখী যেমন আকাশে, মাছ যেমন জলে বিচরণ করে, বাঙালীও নেই, রাজা ও রাজধানী হইতে দূরে নিজের জন্য একটি স্বতন্ত্র জলাশয় বা বায়ুমণ্ডল সৃষ্টি করিয়া লইয়াছিল, জীবনযাত্রার উপকরণবাহুল্য বর্জ্জন করিয়া, সুখ-সম্পদর উচ্চাভিলাষ দমন করিয়া, সে যে-স্বাধীনতা ভোগের আয়োজন করিয়া লইয়াছিল, তাহা তাহার প্রকৃতি ও প্রতিভার পক্ষেই সম্ভব। বাঙালীর ইতিহাস এ পর্য্যন্ত রচিত হয় নাই, যাহা হইযাছে তাহা বাংলাদেশের ইতিহাস―বাঙালীজাতির ইতিহাস নয়। বাঙালীর সেই জাতিগত বৈশিষ্ট্য না বুঝিলে, বাঙালীর সাধনা ও সংস্কৃতির সহিত মিলাইয়া না লইলে, সেই প্রকৃত ইতিহাস অজ্ঞাত থাকিয়াই যাবে। আমি ঐ যে স্বাধীনতার কথা বলিয়াছি―বাঙালীর ইতিহাস সেই স্বাধীনতা, সেই বৈশিষ্ট্য-রক্ষার ইতিহাস। সেই স্বাধীনতা সন্ন্যাসীর স্বাধীনতাও নয়, আবার রাজভোগের স্বাধীনতাও নয়। বাঙালী রাজাও নয়, ফকিরও নয়; তাহার