পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

৷৷৵৹

প্রায় অজ্ঞাত রহিয়া গিয়াছে; বিশেষ করিয়া কংগ্রেসের সহিত তাঁহার সেই বিরোধ―সেই বিরোধের কারণ ও গুরুত্ব সম্বন্ধে জনসাধারণ প্রায় অজ্ঞ। এই অজ্ঞতার হেতু কি তাহা কাহারও বুঝিতে বিলম্ব হইবে না। সেই স্মৃতিকে জন-চিত্ত হইতে মুছিয়া ফেলাই যাহাদের একান্ত প্রয়োজন তাহারাই, সুভাষচন্দ্রের আজীবন একনিষ্ঠ প্রয়াস―আসন্ন ও নিশ্চিত সর্ব্বনাশ হইতে দেশকে বাঁচাইবার জন্য তাঁহার সেই আকুল আগ্রহ, এবং তাহারই প্রতিমুখে কংগ্রেসের সর্ব্বশক্তি-নিয়োগ―ত্রিপুরীর সেই কলঙ্ক-কাহিনী—এখনও মৃত্তিকাতলে পিহিত রাখিয়াছে। আমি এই পুস্তকে, সেই কাহিনীর যেটুকু অত্যাবশ্যক তাহাই পুনরুদ্ধার করিয়াছি; অত্যাবশ্যক এইজন্য যে, ঐ কাহিনীতেই আজাদ হিন্দ্-ফৌজের নেতাজীকে―মেঘাচ্ছন্ন হইলেও, নবোদিত সূর্য্যের মত দেখিতে পাওয়া যাইবে। আমি বলিয়াছি, গান্ধী-নীতি ও গান্ধী-কংগ্রেসের সহিত তাঁহার সেই বিরোধই তাঁহার ধর্ম্মের মূলমন্ত্র এই বিরোধকে কোনরূপে ছোট করা বা অস্বীকার করা চলিবে না―সুভাষচন্দ্রের গান্ধী-ভক্তির দোহাই দিয়া গান্ধীজী ও সুভাষ উভয়েরই মান-রক্ষা করিবার চেষ্টাও নিষ্ফল। পাছে কেহ মনে করেন যে, আমি আমারই ব্যক্তিগত মত বা ধারণার বশে, সুভাষচন্দ্রের উপরে ঐরূপ একটা অনমনীয় মনোভাব আরোপ করিয়াছি, এজন্য আমি এই পুস্তকের ‘পরিশিষ্টে’ সুভাষচন্দ্রের এমন কয়েকটি উক্তি উদ্ধৃত করিয়াছি যাহাতে, আর কিছু না হোক, সুভাষচন্দ্র যে গান্ধীবাদের সহিত কোনরূপ রফা করিতে প্রস্তুত ছিলেন না, তাহার নিঃসংশয় প্রমাণ মিলিবে।

 সুভাষচন্দ্রের স্বকীয় রাজনীতি, তাঁহার বিশ্বাস ও লক্ষ্য কি ছিল, তাহার যথাসাধ্য পরিচয় ও প্রমাণ আমি দিয়াছি, কিন্তু একটি বিষয়ে আমি পাঠক-পাঠিকার দৃষ্টি বিশেষ করিয়া আকর্ষণ করিতে চাই।