পাঠিকাগণকে আমি কেবল ইহাই ভাবিয়া দেখিতে বলি যে, গান্ধীজীর এই যে একচ্ছত্র নেতৃত্বের অধিকার—তাহার প্রধান কারণ কি এই নয় যে, সমগ্র গান্ধী-আন্দোলনের মূলে একটা কঠোর ও বিশুদ্ধ ধর্ম্মনীতি আছে? গান্ধীজী তাঁহার সংগ্রাম হইতে রাজনীতির কূট-কৌশল, অসাধুতা ও শঠতা সম্পূর্ণ বর্জ্জন করিয়া কেবল সত্য ও সততাকেই একমাত্র অস্ত্ররূপে গ্রহণ করিয়াছিলেন বলিয়া, দেশের রাজনীতিজ্ঞ ব্যক্তিগণ তাঁহার অসংখ্য ভ্রম-প্রমাদ ও যুক্তিহীন কর্ম্মপদ্ধতিকে—এমন কি, যাহাতে পরাজয় বা সর্ব্বনাশ অনিবার্য্য তাহাকেও—মানিয়া লইয়াছেন; রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানে তাঁহার পারমার্থিক কার্য্য-নীতিও যদি সফল হয়, এই আশায় তাঁহার হাতে ভারতের ভাগ্য ছাড়িয়া দিয়াছিলেন। কিন্তু যখন দেখা গেল, সেই সত্য ও সাধুতা তাহাতে নাই, মহাত্মাও লুকাচুরী খেলিতে আরম্ভ করিয়াছেন—কংগ্রেসের সম্মুখভাগে না থাকিয়া তাহার পশ্চাতে আত্মগোপন করিয়া কল-কাঠি নাড়িতে লাগিলেন; সকল দলের ঊর্দ্ধে থাকিয়া, সম্পূর্ণ অপক্ষপাত রক্ষা করিয়া, ভারতীয় জন-মনের ঐক্যবিধায়ক মহাগুরুর ভূমিকা গ্রহণ না করিয়া, তিনি ভিতরে ভিতরে একটি দল গঠন করিয়া লইলেন; মতিলাল, লাজপৎ রায়, চিত্তরঞ্জন প্রভৃতির লোকান্তর-গমনে তিনি নিঃসপত্ন হইলেন, এবং শেষে একমাত্র উদীয়মান শত্রুকে দমন করিবার জন্য নিজের সেই দলটিকে আরও দৃঢ়তর করিয়া যখন তিনি প্রকাশ্যে সেই দলীয় মনোভাব
পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১৫৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী
১১৭