পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী
১৪১

 কংগ্রেস ইহা স্বীকার করে নাই—কিন্তু ইহাই যে সত্য, সুভাষচন্দ্র নেতাজী-রূপে তাহা অক্ষরে অক্ষরে প্রতিপন্ন করিয়াছেন। ইহাতেই প্রমাণ হয়, সুভাষচন্দ্রের নেতৃত্ব-প্রতিভা কত বড়, সে প্রতিভা দৈবী-প্রতিভা, সেই দৃষ্টিও দিব্যদৃষ্টি। কংগ্রেসের সেই নীতি ও তাহার কার্য্যপদ্ধতির পরিণামদৃষ্টে কি ইহাই মনে হয় না যে, সেইকালে যদি সে সুভাষচন্দ্রের হাতে নেতৃত্ব ছাড়িয়া দিত, তবে আজ ভারতের ভাগ্য অন্যরূপ হইত? আসল কথা, কংগ্রেস জনগণকে বিশ্বাস করে নাই, কেবল শাসন করিয়াছে, হুকুম পালন করাইয়াছে; স্বাধীনতালাভ অপেক্ষা নেতৃত্বের নেশাই তাহাকে পাইয়া বসিয়াছে। এই প্রসঙ্গে এক আশ্রম-গুরু সন্ন্যাসীর একটি উক্তি মনে পড়ল, এখানে তাহা উদ্ধৃত করিতেছি—ঐরূপ নেতাদের সম্বন্ধে তিনিও বলিতেছেন—

 “নেতারা জনসাধারণকে আটকাইয়া রাখে, নিজেদের “মানদণ্ড” বজায় রাখিবার জন্য, অবশ্য মুখে তাহাদের বড় বড় আদর্শের কথা বলিতে হয়; নচেৎ লুঠটা নিরাপদ হইবে কেন? জনসাধারণ প্রাণপ্রধান, তাই চালাকি অনেক সময়ে তাহাদের চোখে ধরাই পড়ে না। তবে প্রাণধর্ম্মী মুক্ত পুরুষ যদি জনসাধারণের মধ্যে প্রাণ লইয়া; ঝাঁপাইয়া পড়েন, তবে প্রাণোপাসক জনসাধারণ তাঁহার সঙ্গে প্রাণসাধনায় যুক্ত হইবে, চালক নেতৃবৃন্দ তখন ফাঁপরে পড়িয়া জনসাধারণের চরণতলে আসিতে বাধ্য হইবেন। যীশু, মহম্মদ, বুদ্ধ, গৌর সকলেই প্রাণপ্রধান জনগণের সঙ্গে পরিচিত হইয়াছিলেন” (‘স্বরাজের পূর্ণরূপ’—শ্রীমৎ স্বামী পুরুষোত্তমানন্দ অবধূত, পৃঃ ৩১)।