পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী
১৪৩

ইহাতে সুভাষচন্দ্র যেন দর্পণে আপনাকেই দেখিতেছেন, তাই ইহার নাম দিয়াছেন ‘Heart-searching’ বা ‘আত্ম-পরীক্ষা’। অতএব এই প্রবন্ধে তাঁহার আত্ম-পরিচয় আছে। তিনি যে ‘জনগণমন অধিনায়ক’ হইবার যােগ্যতা লাভ করিয়াছেন, সেই বিশ্বাস তাঁহার হইয়াছে—তাহা যে কত সত্য, আজাদ-হিন্দ ফৌজ তাহা প্রমাণ করিয়াছে।

 শুধু এই উৎকৃষ্ট ‘জনগণমনঅধিনায়কতা’র নেতৃপ্রতিভাই নয়—সুভাষচন্দ্রের রাজনীতি-জ্ঞান ও দূরদৃষ্টি কিরূপ অসামান্য ছিল, তাহার কিঞ্চিৎ নিদর্শন দিব।

 কংগ্রেস অধুনা যে Constituent Assembly বা গণপরিষদের নামে মাতিয়া উঠিয়াছে, এবং তাহাই পরমপুরুষার্থ বলিয়া ঘােষণাদ্বারা সর্ব্বভারতকে মেঘাচ্ছন্ন করিয়াছে, সেই গণপরিষদের ফন্দিটি তাহার নূতন আবিষ্কার নয়। গান্ধীজী যেদিন হইতে ব্রিটিশ সরকারের সহিত সংগ্রাম পরিহার করিলেন সেইদিন হইতেই আসল বস্তুর নামে ঐ নকল বস্তুর দ্বারা ভারতের পূর্ণস্বাধীনতা বা স্বরাজকে চাপা দিলেন—ভারতের বুদ্ধিমান শিক্ষিত জনগণকেও ঠকাইবার এতবড় কৌশল ইতিপূর্ব্বে কেহ আবিষ্কার করিতে পারে নাই। আজ সেই গণপরিষদই সরকারের সহিত চিরসন্ধি-স্থাপনের প্রধান উপায় হইয়াছে।[১]

  1. এই গণ-হীন গণ পরিষদই ভারতের গণ-তন্ত্র প্রণয়ন করিতেছে—তাহা ‘ভারতীয় নহে’, হুবহু বিলাতী।