পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী
১৪৭

ইদানীন্তন কালে যদি কোন প্রকৃত নেতৃগুণসম্পন্ন পুরুষের আবির্ভাব হইয়া থাকে, তবে সে পুরুষ সুভাষচন্দ্র। শুধু তাহাই নয়, এই স্বাধীনতা-সংগ্রামের ইতিহাস যখন লিখিত হইবে, তখন সেই ভবিষ্যৎ ঐতিহাসিক নিশ্চয় ইহা লক্ষ্য করিবেন যে, সেই যুদ্ধে জয়লাভের যে একটি মহাসুযােগ আসিয়াছিল তাহা অতিশয় শোচনীয়রূপে ব্যর্থ করিয়া ছিল তাহারাই—যাহারা সেই লগ্নে সুভাষকে দেশত্যাগী করিয়াছিল। সেই সংগ্রামের একটা দীর্ঘ অধ্যায় প্রায় শেষ হইয়াছে, কংগ্রেস—গান্ধী-কংগ্রেস—এক্ষণে প্রায় পরাজিত বা পতনােন্মুখ, দেশব্যাপী হিংসা-হানাহানি ও পৈশাচিক তাণ্ডবের মধ্যে তাহার সেই অহিংসা ও আপোষ-নীতির সমাধি হইতেছে।[১] ইহার পর জনসমুদ্রে ব্যর্থশ্বাসের যে তুমুল ঝড় উঠিবে, তাহাকে নিয়ন্ত্রিত করিবে কে? নেতাজীর মত পুরুষ একই যুগে একই জাতির মধ্যে কয়বার আবির্ভুত হয়? “তবু আশা জেগে থাকে প্রাণের ক্রন্দনে”।

নেতাজী-চরিত -উপসংহার

 এইবার আমি, নেতাজী সুভাষচন্দ্রের মধ্যে মানবাত্মার যে অপূর্ব্ব প্রকাশ দেখিয়াছি, তাহারই আরতি ও অর্চ্চনা করিয়া

  1. একথা আরও সত্য; যাহা অবশ্যম্ভাবী তাহা ঘটিতে একটু বিলম্ব হইয়াছে মাত্র। ক্ষীর খাইয়া স্বাধীনতা লাভ করা যায় না, গেলেও ভিক্ষালব্ধ চাউলের মত— ভিক্ষালব্ধ রাজপাটে সুখভোগ হইতে পারে না। প্রভুত্ব বজায় রাখিবার জন্য ন্যায় ও সত্যকে জলাঞ্জলি দিতে হয়— শক্তের তোষামোদ ও দুর্ব্বলের নিপীড়ন আবশ্যক হইয়া পড়ে। এইজন্য ঘোরতর অরাজক ও বিপ্লব অবশ্যম্ভাবী।