পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী
১৫১

তাঁহাকে পাগল করিয়াছিল। তাহারই প্রেমে তিনি সর্ব্বত্যাগী সন্ন্যাসী হইলেন―জীবন ও যৌবন তাহাকেই সমর্পণ করিলেন; এমন সর্ব্বত্যাগ আর কেহ করে নাই। এমন একনিষ্ঠ প্রেম, এমন অনন্যময়তা বােধহয় আর কোন দেশোদ্ধারব্রতী ইতিহাসপ্রসিদ্ধ পুরুষের জীবনে লক্ষিত হইবে না। প্রায়ই দেখা যায়, দেশকে ভালবাসিয়া, দেশের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করিয়া যাঁহারা অমর কীর্ত্তি অর্জ্জন, করিয়াছেন তাঁহাদের প্রায় সকলেরই অপর কোন প্রেম-পাত্র বা পাত্রী ছিল; সুভাষচন্দ্রের প্রেমে পাত্রভাগ ছিল না, ঐ এক প্রেম ও এক পাত্র ভিন্ন তাঁহার জীবনে আর কিছুই ছিল না।[১]

 কিন্তু ঐ প্রেমও মূলে মানবাত্মারই এক গভীর চেতনা ও বেদনা-প্রসূত। মানুষ-সুভাষচন্দ্রকে না দেখিলে এই প্রেমের সেই মূলটিকে দেখিতে পাওয়া যাইবে না। একদিকে যেমন আত্মার আত্মসম্মানবােধ, অপরদিকে তেমনই সর্ব্ব-অভিমান ত্যাগ করিয়া অতি দীন-হীন দুঃখী-জনকে বক্ষে আলিঙ্গন করিবার―সেবা করিবার সে কি আকিঞ্চন! শােনা যায়, পথের ধূলা হইতে রােগকাতর কাঙাল বালককে কুড়াইয়া বক্ষে বহিয়া গৃহে আনিতে তাঁহার বাধিত না; এ কাহিনী

  1. বিলাত প্রবাসকালে ছাত্রাবস্থায় তরুণ সুভাষচন্দ্র সম্বন্ধে দিলীপকুমার এইরূপ লিখিয়াছেন:―
     "But all the mystic ardour of Subhas had been diverted and canalised to this end. It is not everybody who could subordinate his whole life to one consuming ideal. (Ibid. P. 67)