পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৪
জয়তু নেতাজী

‘ঝান্সীর-রাণী’―নারীসেনার কয়েকজনকে নিরাপদ স্থানে পৌছাইয়া দিবার ভার গ্রহণ করিলেন। তাঁহার গভর্ণমেণ্ট তখন ব্যাঙ্কক শহরে স্থানান্তরিত হইয়াছে, রক্ষীবেষ্টিত সামরিক যানে তথায় তাঁহার গমন করিবার কথা; তিনিই সর্ব্বাধিনায়ক, আজাদ-হিন্দ্-ফৌজের সর্ব্বস্বধন, তাঁহার প্রাণরক্ষার জন্য সকলেই উৎকণ্ঠিত। কিন্তু তিনি সে সকল কথা গ্রাহ্য করিলেন না; কতিপয় নারী-সৈন্যকে নিরাপদ স্থানে পৌছাইয়া দিবার জন্য নিজেই, মাথার উপরে শত্রুপক্ষের বিমান হইতে গােলাবর্ষণ, পথে সাঁতার দিয়া নদীপার, মাঝে মাঝে জঙ্গলে আশ্রয় গ্রহণ প্রভৃতি সর্ব্বপ্রকার সঙ্কট ও দৈহিক কষ্ট তুচ্ছ করিয়া, তাহাদিগকে বিপদ-মুক্ত অবস্থায় রাখিয়া আসিয়া নিশ্চিন্ত হইয়াছিলেন।[১]

 গীতা বলিয়াছেন―“অন্বেষ্টা সর্ব্বভূতানাং মৈত্র করুণ এব চ”; পাঠ করিবার সময়ে মনে হয়, ইহাই আদর্শ-চরিত্র বটে, এবং যাহারা সৰ্বত্যাগী সন্ন্যাসী, যাহারা সমাজে থাকিয়াও কর্ম্মত্যাগের সাধনা করে, তাহাদের পক্ষেই এইরূপ আদর্শ-চরিত্র হওয়া সম্ভব। কিন্তু যাহাদিগকে কোন একটি বৃহৎ ব্রতউদযাপনের জন্য সমাজের সর্ব্বস্তরের সকল পক্ষ ও দলের সহিত ক্রমাগত সন্ধি-বিগ্রহ করিয়া চলিতে হয়, তাহাদের মত ব্যক্তির

  1. অহিংসা-ধর্ম্মে এইরূপ পৌরুষের প্রয়োজন হয় না, নারী-সৈন্য তো পরের কথা, কুলকামিনীদিগকেও রক্ষা করিতে হয় না―তাহারা নিজেরাই আত্মহত্যা করিয়া (বিষপান) নিজেদের সতীত্ব রক্ষা করিবে; পুরুষে তাহার সতীত্ব রক্ষা করিবে কেন? তাহাতে হিংসার প্রয়ােজন হইতে পারে।