পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী
১৫৭

সুভাষচন্দ্র যে শাক্ত―শক্তির উপাসক, এ কথা পূর্ব্বে বলিয়াছি; কিন্তু সুভাষচন্দ্রের শক্তি-উপাসনা―তাঁহার সেই নারী-পূজাও কম লক্ষণীয় নয়। নারীজাতির প্রতি এমন কামগন্ধহীন শ্রদ্ধা একটি বিশিষ্ট সাধনা-সাপেক্ষ।[১] মনে রাখিতে হইবে, সুভাষচন্দ্র আকুমার ব্রহ্মচারী, তিনি কোন নারীকে―বিবাহ-মন্ত্রে শোধন করিয়াও―কাম-সঙ্গিনী করেন নাই; তাঁহার সে শ্রদ্ধা সম্পূর্ণ যৌন-সংস্কার-মুক্ত। এই ব্যবহারে একাধারে রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দকে যুক্ত হইতে দেখি, একজনের নারী সম্বন্ধে শিশু বা সন্তানবৎ ব্যবহার―বিবাহিত স্ত্রীকেও অন্যভাবে গ্রহণ, আর একজনেব নারীকে পুরুষের সমকক্ষরূপে, সহযােগিনীরূপে, সমান মর্য্যাদা-দান, ইহাও সুভাষ-চরিত্রের একটা বড় লক্ষণ―খাঁটি পৌরুষের লক্ষণ। নারীকে এইরূপ শ্রদ্ধা করিতে পুরুষেই পারে―কাপুরুষে পারে না। তথাপি, আমাদের দেশে পুরুষের এই পৌরুষ-লক্ষণ বহুকাল লুপ্ত হইয়াছিল। সুভাষচন্দ্র যে কত বড় পুরুষ―তাঁহার নারী-পূজাই তাহার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন।

 আমি সুভাষ-চরিত্রের যে লক্ষণগুলির উল্লেখ করিয়াছি―তাহা তাঁহার ব্যক্তিগত পুরুষ-চরিত্রের লক্ষণ, অর্থাৎ মানুষসুভাষের পরিচয় তাহাতে আছে। তাঁহার প্রতিভা ও মনীষা, অপূর্ব্ব দক্ষতা বা উপায়-কুশলতা, রাজনীতি ও রণনীতি জ্ঞান,

  1. ইহা যেন তাঁহাকে একরূপ সাধনার দ্বারাই লাভ করিতে হইয়াছিল, কারণ, তিনি প্রথম যৌবনে নারীজাতির প্রতি বিমুখ ছিলেন। শ্রীযুক্ত দিলীপকুমারের গ্রন্থে তাহার সুস্পষ্ট উল্লেখ আছে।