পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী
১৫৯

হইয়া আছে, কিন্তু উদ্বেল জনসমুদ্র স্থির থাকিতে পারিতেছে না―উন্মাদনার ঝটিকাবেগে আন্দোলিত হইতেছে। এমন সময়ে মঞ্চের উপরে নেতাজীর এ কোন্ মূর্ত্তি! শপথ-বাণীর এক স্থানে আসিয়া তাহা পাঠকালে হঠাৎ তাঁহার কণ্ঠ রুদ্ধ হইয়া গেল, তারপর দেহে আর স্পন্দ নাই, চক্ষুতারকা অপলক, সর্ব্বশরীর পাথরের মত কঠিন হইয়া গেছে! একেবারে সমাধিস্থ! সীজার হ্যানিবলের কি এমন সমাধি হইত? এ কি রণােন্মাদের সমাধি? যােদ্ধৃবেশপরিহিত মূর্ত্তি, সম্মুখে বিরাট সৈন্য-প্রদর্শনী,―তাহার মধ্যে এ কি ভাবাবস্থা! দেশের চল্লিশকোটি নর-নারীর দাসত্বমােচন, তাহাদের সেই দুর্ব্বিষহ দারিদ্র ও অসীম দুর্গতি স্মরণমাত্রে সারাপ্রাণে বেদনার বিদ্যুৎ-স্ফুরণ হইল, সেই চল্লিশকোটির বেদনা একটি মানুষের দেহে নিমেষে পুঞ্জীভূত হইয়া উঠিল―সেই পুঞ্জীভূত বেদনার বিরাট স্পন্দনে সারাদেহ নিস্পন্দ হইয়া গেল। কিন্তু এমন সমাধি ত আর কাহারও হইতে শুনি নাই। প্রায় বিশমিনিট বা অর্দ্ধঘণ্টা ব্যাপিয়া তেমনই অবস্থা―দেহ নিস্পন্দ, চক্ষু পলকহীন; শেষে সেই দেহ স্পর্শ করিলে পর সম্বিৎ ফিরিয়া আসিল। আমি সেই মহাপ্রেমের সেই সমাধি―নেতাজীর সেই মূর্ত্তি আমার মানসনেত্রে অহরহ দেখিতেছি।

 এ মানুষ কি শুধু ‘নেতাজী’? এ যে মানবাত্মার এক নবতম পরিচয়। ভারতভূমি ভিন্ন আর কোন দেশে এহেন রূপ কখনও সম্ভব হইত না। আজাদ-হিন্দ্-সেনার প্রত্যেক