পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

১৴৹

থাকিবেন। কথাটা মিথ্যা নহে;―কারণ, বাঙালী যেমন ভাবুক তেমনি ভাবপ্রবণ, ভাবকে বা তত্ত্বকে সে জীবনের তথ্যরূপে সাক্ষাৎ করিতে চায়। ইহাই তাহার তান্ত্রিকতা, এ বিষয়ে ফরাসী জাতির সহিত তাহার কথঞ্চিৎ সাদৃশ্য আছে। দ্বিতীয় মন্তব্যটি আরও গুরুতর এবং একজন অ- বাঙালীর বলিয়া মূল্যবান। ঐ যে ‘separatist and rebellious spirit’ —উহা ভারতের অপর জাতিসকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছে, এবং―ভাবনারও কারণ হইয়াছে; তাই কি বাঙালীর প্রতি অ-বাঙালী কংগ্রেসের মমতা প্রায় নিঃশেষ হইয়া আসিয়াছে? ঐ স্বাতন্ত্র্য-বোধ বাঙালী জাতির জন্মগত, ইহার কারণ অবশ্যই আছে; কিন্তু সেজন্য পূর্ব্ব-ইতিহাসে কোনরূপ সমস্যার উদ্ভব হয় নাই, আজ হইয়াছে। পুর্ব্বে, বাঙালী তাহার ধর্ম্মগত স্বাতন্ত্র্য বা স্বেচ্ছাচারের জন্য যতই অশ্রদ্ধাভাজন হউক,তাহাতে কাহারও ক্ষতি ছিল না, তখন সে তাহার সেই স্বাতন্ত্রধর্ম্মকে রাজনীতির বাহন করিয়া সারাভারতকে অনুগামী করিবার দুরাশা পোষণ করিত না। ইহাও সত্য যে, অবশিষ্ট ভারতের অভ্যস্ত সংস্কার ও মনোবৃত্তি সম্বন্ধে তাহার একটা প্রতিকূল মনোভাব আছে, তাই সেই ভারতের আধুনিক আচার ব্যবহারকে সে শ্রদ্ধা করে না; কিন্তু প্রাচীন ভারত―সেই গীতা, মহাভারত, সাংখ্য, বেদান্তের ভারতকে সে আপনার ভাবে আত্মসাৎ করিয়াছে, সেই ভারতের গৌরবে সে আত্মহারা। তাই আজিকার ভারতকেও সে অপর এক কারণে বুকে জড়াইয়া ধরিতে চায়। এই বিরাগ ও অনুরাগ দু-ই সত্য। কিন্তু আজ এমন এক বাঙালীর অভ্যুদয় হইয়াছে, যাহার বাঙালীত্বের বিশাল বক্ষে সর্ব্ব-ভারত আলিঙ্গিত হইয়াছে; যে বাঙালী হইয়াও আর বাঙালী নয়―বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত ভারতকে এক দেহে পরিণত করিয়া সে তাহারই প্রাণরূপে স্পন্দিত হইতেছে! তাই আশা হয়,

 ভূ―২