পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৬
জয়তু নেতাজী

‘মহাত্মা’ হইতে পারিয়াছেন। হাজার বছর ধরিয়া যাহারা আফিমের নেশা করিয়াছে তাহাদিগকে কোন্ বস্তুটি দিলে কৃতার্থ হইয়া যায় ইহা গান্ধীজী খুব ভাল করিয়া বুঝিয়া লইয়াছিলেন। উপরে আর যে কথাগুলি আছে, তাহাতে সুভাষচন্দ্র অতি-গভীর তত্ত্ব-দৃষ্টি ও রাজীতিজ্ঞানের পরিচয় দিয়াছেন―কথাগুলি এতই মূল্যবান্ যে তাহার অনুবাদ না দিয়া পারিলাম না ―

 “গান্ধীজীর ব্যর্থতার প্রথম কারণ―নেতার শক্তি নির্ভর করে অনুচর-সংখ্যার উপরে নয়, পরন্তু সেই অনুচরবৃন্দের প্রকৃতি বা চরিত্রের উপরে। গান্ধীজীর অপেক্ষা বহুগুণ অল্প অনুচর লইয়াও অপরাপর নেতা স্বদেশ উদ্ধার করিতে সমর্থ হইয়াছেন।

 “দ্বিতীয় কারণ,―তিনি নিজ-দেশীয় জনগণের চরিত্র যেমন বুঝিয়াছেন প্রতিপক্ষ বা ইংরাজ জাতির চরিত্র তাহার তুলনায় কিছুমাত্র বুঝিতে পারেন নাই―একজন ‘মহাত্মা’ যেরূপ যুক্তিকে আশ্রয় করেন, ‘জন বুল’ তাহাতে ধরা দেয় না।

 “তৃতীয় কারণ―যে সকল ক্ষেত্রে স্বার্থ-বিরোধ অতিশয় মূলগত, সেখানে একটা কৃএিম ঐক্য-স্থাপনের চেষ্টা করিলে রাজনৈতিক সংগ্রামে শক্তিবৃদ্ধি না হইয়া শক্তিক্ষয় হইয়া থাকে। ভারতের ভবিষ্যৎ ভাগ্য তাহারাই স্থির করিবে যাহারা সম্পূর্ণ স্বাধীনচিত্ত ও সংগ্রামশীল, এবং সেইজন্য স্বাধীনতা-অর্জ্জনের জন্য সর্ব্বপ্রকার কষ্ট ও ত্যাগস্বীকার করিতে সমর্থ।  “সর্ব্বশেষ কারণ এবং তাহাও সামান্য নয়―এই যে, তিনি একই কালে দুইটি বিপরীত ব্রত গ্রহণ করিয়াছেন―দাসত্বমােচনের জন্য একটি পরাধীন জাতির নেতৃত্ব, এবং পৃথিবীতে একটি নবধর্ম্ম-প্রচারের জন্য জগৎ-গুরুর ভূমিকা”