পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৪
জয়তু নেতাজী

ভারতের মঙ্গল না হইয়া অমঙ্গল বৃদ্ধি পাইল! আমি এই প্রবন্ধে সুভাষচন্দ্রের গ্রন্থ হইতে―তাঁহার উক্তি, সমালোচনা ও মতামত হইতেই―প্রমাণ করিব, সুভাষচন্দ্র গান্ধীকে ঠিকই চিনিয়াছিলেন, কেবল অন্তরের একটু দুর্ব্বলতার জন্য তিনি গান্ধী সম্বন্ধে পূর্ণ সত্যটি স্বীকার করিতে পারেন নাই।

 এক অর্থে তাঁহার কথা সত্য। গান্ধী যে সাধু ও সত্যনিষ্ঠ―অর্থাৎ তাঁহার নিজের মনোগত অতি প্রায় ও সংকল্প হইতে তিনি কখনও বিচ্যুত হন নাই, নিজের প্রতি কখনও অবিশ্বাসী হন নাই―ইহা সত্য। সে বিষয়ে গান্ধীর মত সত্যনিষ্ঠ পুরুষ সংসারে বিরল। কিন্তু ভারতের ইতিহাসে এমনই একজন আত্মবিশ্বাসী ও সত্যনিষ্ঠ পুরুষের কথা আমরা জানি, তিনি ― মোগল সম্রাট ঔরংজীব। তিনিও তাঁহার ধর্ম্মবিশ্বাস এতটুকু ক্ষুন্ন করেন নাই; সেই বিশ্বাস এমন গভীর ও দৃঢ় ছিল যে, সেই ধর্ম্মকে ভারতে জয়ী করিবার জন্য তিনি আর কোন চিন্তা―কোন সমস্যাকে মনে স্থান দেন নাই; রাজ্য ধ্বংস হউক, তবু তিনি তাঁহার সেই ধর্ম্ম-প্রতিষ্ঠায় কিছুমাত্র বিচলিত হন নাই। আবার সেই সাধু ও সত্য-সংকল্পের বশে তিনি তাঁহার প্রতিবাদী বিরুদ্ধ পক্ষের সহিত ব্যবহারে কোন ছল কোন চাতুরীকেই অধর্ম্মাচরণ বলিয়া মনে করেন নাই; ভারতের মুসলমান-সমাজে তজ্জন্য তাঁহার মহত্ত্ব বা সাধুত্ব কিছুমাত্র লাঘব হইয়াছে বলিয়া তিনি নিন্দিত হন নাই, আজিও ভারতের বিশাল মুসলমান-সমাজে ঔরংজীব একজন মহাধর্ম্মপালরূপে পূজিত হইয়া থাকেন। অতএব, গান্ধী যে সাধু ও মহাত্মা―ত্রিশকোটী ভারতবাসীর চক্ষে তিনি অবতার-স্বরূপ, ইহাতে