পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৬
জয়তু নেতাজী

এবং তাঁহার অতুগত অন্ধভক্তিপরায়ণ এক বিশাল জনবাহিনীই সর্ব্বেসর্ব্বা হইয়া উঠিল। কিন্তু একটি বিষয়ে সুভাষচন্দ্র ভুল করিয়াছিলেন, সাধু মহাত্মারাও যে তাঁহাদের সংকল্প-সাধনের জন্য কূটনীতির আশ্রয় গ্রহণ করেন, বা করিতে পারেন, তাহা তিনি ভাবিতে পারেন নাই;―তাহা যে বুদ্ধিহীনের ভ্রম নয়, পরন্তু কর্ম্মযোগীর সেই “কর্ম্মসু কৌশলম,” এই তত্ত্ব তিনি জানিতেন না। এই বিষয়ে তিনি জিন্না-সাহেবের মত সংস্কারমুক্ত হইতে পাবেন নাই, পারিলে অনেক দুঃখ, অনেক ব্যর্থ পরিশ্রম হইতে অব্যাহতি পাইতেন। ত্রিপুরীর পরেও তাঁহার সেই সংস্কার ঘুচে নাই; আজাদ-হিন্দ্-ফৌজের নেতা হইয়াও তিনি সেই একটুখানি বিশ্বাস ত্যাগ করিতে পারেন নাই। কিন্তু তাঁহার মত প্রেম ও সত্যের সাধক যিনি তাঁহার এই ভুল ভাঙ্গিবেই। আজ তিনি যদি বাঁচিয়া থাকেন তবে স্পষ্টই দেখিতে পাইবেন,―গান্ধী ভুল করেন নাই, তিনি তাঁহার অভিপ্রায় সিদ্ধ করিয়াছেন; তাঁহার সেই নেতৃত্বের মূলনীতিকে তিনি আপাত-সাফল্যে মণ্ডিত করিয়াছেন―তাহারই আনন্দোৎসব করিতে করিতে নিষ্ঠুর নিয়তির হস্তে মৃত্যুলাভ ও করিয়াছেন। এই নিয়তি বড় রহস্যময়, তাহার কথা স্বতন্ত্র।

 গান্ধীর সেই অভিপ্রায়, তাঁহার সেই সংকল্প ও সেই নীতি বা কর্ম্মপদ্ধতি কিরূপ? এই গ্রন্থে সুভাষচন্দ্র সর্ব্বত্রই তাহার ইঙ্গিত দিয়াছেন, কিন্তু কোথাও সেই ইঙ্গিত নিজে স্পষ্ট বুঝিবেন না―ইহাই যেন তাঁহার প্রতিজ্ঞা। আমি পরে তাহার কিছু কিছু প্রমাণ দিব। ভারত চায় স্বাধীনতা―সুভাষচন্দ্র ও তৎকালবর্ত্তী বিপ্লবীদল (পুরাতন কংগ্রেস তখন বাতিল হইয়া গিয়াছে) ভারতের ঐ স্বাধীনতাকে―পুর্ণ স্বাধীন-