পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
২০৭

কোনদিকেই কোন প্রকারে করা সম্ভব নয়, তাহা গত ৪০|৫০ বৎসরের নিদারুণ অভিজ্ঞতায় সকল চিস্তাশীল দেশ-প্রেমিক বুঝিতে পারিয়াছিলেন। অতএব হিতসাধন আগে নয়―মুক্তিসাধনটাই আগে; সুভাষচন্দ্রও ইহাই দৃঢ় বিশ্বাস করিতেন। তাহা হইলে, গান্ধীর ঐ হিতসাধন-চেষ্টার মূল্য কি? ঐ মুক্তিসাধনের পক্ষে তিনি দুইটিমাত্র কাজ করিয়াছিলেন―এক, জনসাধারণের চিত্তে তাঁহার প্রতি অন্ধভক্তি জাগাইয়া একটা বিরাট গড্ডলিকাকে ব্রিটিশের রুদ্ধ-দুয়ারে বার বার ঘা দিবার জন্য ঠেলিয়া দেওয়া,―এবং স্বাধীনতালাভের আকাঙ্ক্ষাকে গান্ধীভক্তির দ্বারা প্রশমিত করিয়া তাহাদিগকে এমন সকল কার্য্যে প্রবৃত্ত করা―যাহার সহিত স্বাধীনতালাভের দূরতম কার্য্য-কারণ-সম্বন্ধ নাই। একটি অতি-উচ্চ বংশদণ্ডে চাউল ও জলের হাঁড়ি ঝুলাইয়া এবং নিয়ে খড়-কুটার আগুন জ্বালাইয়া ক্ষুধার্ত্তগণকে সেইরূপে অন্ন প্রস্তুত হওয়ার আশ্বাস দেওয়া যদি সত্যকার হিতসাধন হয়, তবে গান্ধীর চরকা ও অহিংসা তেমন হিতসাধন করিয়াছে―তদ্দ্বারা যেরূপ স্বাধীনতালাভ সম্ভব তাহাও হইয়াছে। ইহাই গান্ধীর “phenomenal service to the country"―সুভাষচন্দ্রও তাহা বিশ্বাস না করিয়া পারেন নাই! কিন্তু সুভাষচন্দ্র গান্ধীর অভিপ্রায় সম্বন্ধে নিজেও যে নিঃসংশয় হইতে পারেন নাই তাহা স্পষ্টই স্বীকার করিয়াছেন তাঁহার মনের সেই বৈধ কখনও ঘােচে নাই। ১৯২০ সালে তিনি যখন সিভিল সার্ভিস ত্যাগ করিয়া বিলাত হইতে ফিরিয়া একেবারে সরাসরি গান্ধীর সহিত সাক্ষাৎ করিতে যান, এবং তাঁহাকে তাঁহার অভিপ্রায় ও কর্ম্ম-পদ্ধতি সম্বন্ধে কয়েকটি বিশেষ প্রশ্ন করেন, তখন গান্ধী তাহার কোন স্পষ্ট জবাব দেন নাই, বা দিতে চাহেন নাই, যথা―