পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
২২৫

একজন ভাবোন্মত্ত যুবক বলিয়াই বুঝিয়াছিলেন―ইহাদেরই সহিত তাঁহাকে যুদ্ধ করিতে হইবে; অথচ, তখনই তাহার সেই অভিপ্রায় ব্যক্ত করা আদৌ যুক্তিযুক্ত নহে,―তাহা হইলে তৎক্ষণাৎ সকলে তাঁহাকে তাড়াইয়া দিবে। অতএব, গান্ধীকে যে এত কূটনীতি, ছলনা, এমন কি মিথ্যাচার আশ্রয় করিতে হইয়াছিল, তাহার জন্য তিনি দায়ী নহেন―দায়ী ঐ স্বাধীনতাবাদী, ব্রিটিশ-বিরোধী বিপ্লবীগণ। ব্রিটিশরাজকে বিতাড়িত করিবার প্রয়োজন নাই, বরং তাহাদের ‘হৃদয় পরিবর্ত্তণ’ করিয়া, তাহাদেরই সাহচর্য্য ও অভিভাবকতায় প্রজা-সুখ ভোগ করা―তাহাদের প্রীতি ও রাজপ্রসাদই অধিকতর কাম্য। ব্রিটিশ রাজশক্তি ভারত হইতে একেবারে বিতাড়িত হইবে, ইহা ভাবিতেও তিনি ভয় পাইতেন; তাহারা চলিয়া গেলে এদেশ শাসন করিবে কে? তাঁহার অনুচর ঐ কংগ্রেসী নেতৃমণ্ডলী? তাহারা শাসন-কর্ম্মের কি জানে? ব্রিটিশের চৈতন্য-সম্পাদনের জন্য―তাহাদিগকে একটু খোঁচা বা গুঁতা দিয়া কিঞ্চিৎ প্রজাস্বত্ব আদায় করিবার জন্যই, তিনি উহাদিগকে অহিংসা ও সত্যাগ্রহে দীক্ষিত করিয়াছেন; তারপর, তাহারা প্রজার পক্ষ হইয়া ব্রিটিশরাজের সাহচর্য্য[১] করিবে মাত্র; ব্রিটিশ গবর্ণমেণ্টের স্থান অধিকার করিবার মত যোগ্যতা তাহাদের কোথায়? অতএব, গান্ধী প্রকৃতপক্ষে ব্রিটিশের সহিত যুদ্ধ কখনও করেন নাই― তাহার একমাত্র কাজ ছিল জনগণকে বশীভুত করা, এবং ঐ স্বাধীনতাবাদী দলগুলাকে বলহীন করা; তাহা করিতে পারিলে ব্রিটিশের সুবুদ্ধি-সম্পাদন করা সহজ হইবে।

 ১৫

  1. দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এই কথাই বলিয়াছিলেন―“I want to become a partner with the English people।