পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩২
জয়তু নেতাজী

ক্ষেত্রে পাকা করিয়া তুলিলেন। এখন হইতে ভারতবাসী আর কিছুই করিবে না―কেবল চরকা, অহিংসা ও অস্পৃশ্যতাবৰ্জ্জনই তাহাদের স্বাধীনতা-লাভের একমাত্র সাধন হইল। পরাজয়ের লজ্জাকে মহত্ত্বের আবরণ দেওয়া, রাজনৈতিক অজ্ঞতা ও অক্ষমতাকে ধর্ম্মভাবের দ্বারা শোধন করিয়া লওয়া, এবং স্বাধীনতার পরিবর্ত্তে অপর এক বস্তুকে সর্ব্বাগ্রে বাঞ্ছণীয় বলিয়া বিশ্বাস করানো,―এ সকলই গান্ধীর পক্ষে তখন অতিশয় সহজ হইয়া উঠিয়াছে। তাই কংগ্রেসকে ব্রিটিশের সহিত অপোষ-রফা করিবার অনুমতি দিয়া―কেবল একটু দরকসাকসির পর তাহারা যাহা দেয় তাহাই হাসিমুখে গ্রহণ করিবার উপদেশ দিয়া―তিনি একটু তফাতে অবস্থান করিতে লাগিলেন। নিজের পরিবর্ত্তে তিনি তাঁহার শিষ্যগণকেই সকল কার্য্যের জন্য সাক্ষাৎভাবে দায়ী রাখাই যুক্তিযুক্ত মনে করিলেন। ইহা যে কতখানি দূরদর্শিতার পরিচায়ক তাহা আমরা ভারত-ভাগ ও পাকিস্তান স্থাপনের কালে দেখিয়াছি। কংগ্রেসের শেষ-নির্ব্বাচন উপলক্ষ্যেও দেখা গিয়াছিল —জাতীয়তাবাদী মুসলমানকে কংগ্রেস যেন আর আমোল দিতে চায় না; জিন্নার সহিত মিটমাট করিয়া তবে তো ঐ স্বাধীনতা ব্রিটিশের অনুগ্রহে লাভ করা যাইবে। সুভাষচন্দ্রও তাহা বুঝিয়াছিলেন। ইহার অর্থ, কংগ্রেস অতঃপর ব্রিটিশের নিকটে সম্পূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করিল। ইহারই নাম ব্রিটিশ রাজশক্তিকে পরাস্ত করিয়া গান্ধীবাদ ও গান্ধীধর্ম্মের জোরে স্বাধীনতা আদায়। কংগ্রেস অতঃপর সেই আশায় ছিপ ফেলিয়া বসিয়া রহিল।

 এমনই করিয়া গান্ধীর আদি অভিপ্রায় ও কর্ম্মনীতি ব্যর্থ হইল, অথবা সফল হইল বলাও যায়; কারণ, ইংরেজ যে কারণেই হোক, যখন ভারতকে স্বাধীনতা দান করিল তখন তাহা যে হৃদয় পরিবর্ত্তনের ফলে,