পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩৬
জয়তু নেতাজী

দিল। তথাপি, ভারতে ঐ আর এক বিরুদ্ধবাদী সমাজ ছিল বলিয়াই গান্ধীর অহিংসাধর্ম্মের জৌলুস বৃদ্ধি পাইয়াছিল; সকল সমাজই যদি হিন্দু সমাজের মত এমন আধ্যাত্মিক, নিরীহ ও সন্ন্যাসী-ভক্ত হইত, তবে হিংসার রক্ত-সাগরে অহিংসার এমন শ্বেতপদ্ম ফুটিত না―ফুটিবার এমন সুযোগই পাইত না। অতএব, রাজনীতির ক্ষেত্রে ইংরেজের সঙ্গে সন্ধিস্থাপনের আশায় নিরাশ হইয়া গান্ধী তাঁহার সেই আদি অভিপ্রায় একরূপ বর্জ্জন করিলেন। ইহার পর জনগণের একমাত্র কাজ হইল―কোন ফল হউক বা না হউক―ঐ নবধর্ম্মকে সগর্ব্বে ঘোষণা করিবার জন্য কারাবরণ বা মৃত্যুবরণের সুযোগ অন্বেষণ করা। এমনই করিয়া গান্ধী প্রথমে ভারত-গুরু হইয়া পরে জগদগুরু হইবার দাবী সুপ্রতিষ্ঠিত করিলেন। ইহার জন্য তখন হইতে আজ পর্য্যন্ত জগৎময় প্রোপাগাণ্ডা চলিতেছে, এখনও―ভারতের এই অবস্থার পরেও―এই ভারতের দৃষ্টান্তেই ঐ অহিংসা যে মানবসমাজের পক্ষে কত কল্যাণকর তাহা বড় বড় কণ্ঠ ও যন্ত্রযোগে দিগৃদিগন্তে ঘোষিত হইতেছে! ঐ অহিংসার পুণ্যফলে ভারত স্বৰ্গলাভ করিয়াছে―জনসাধারণের বৈকুণ্ঠবাস হইয়াছে, তাহারা স্বাধীন হইয়াছে, ভারতে অখণ্ড শান্তি বিরাজ করিতেছে; অতএব হে জগৎবাসী, তোমরা আশ্বস্ত হও―ঐ অহিংসামন্ত্রে দীক্ষিত হইলে, গান্ধী-গুরুর শরণ লইলে, তোমরাও অচিরে বৈকুণ্ঠধামে বাস করিতে পারিবে।

 সুভাষচন্দ্রের গ্রন্থ হইতে আমি গান্ধী ও গান্ধী-কংগ্রেসের এই যে পরিচয় সংকলন করিয়াছি তাহা সম্পূর্ণ নহে, কারণ, তাঁহার গ্রন্থ ইং ১৩৩৪ সালের পরে আর অগ্রসর হইতে পারে নাই। কাজেই আমিই তাহার একটা উপসংহার যোজনা করিয়াছি। কিন্তু আমার দৃষ্টিভঙ্গি যে সুভাষচন্দ্রের দৃষ্টিভঙ্গিকেই অনুসরণ করিয়াছে, তাহা ঐ গ্রন্থ